24ºc, Haze
Thursday, 23rd March, 2023 4:14 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা মহামারীর জেরে এবছরও বাজেট কমেছে দুর্গাপুজো কমিটিগুলির। থিম থেকে ফের সাবেকিয়ানায় ফিরেছে অনেক পুজোই। খরচ কমাতে প্রতিমাও হচ্ছে একচালার। প্রতিমার পেছনে চালচিত্র, পরণে ডাকের সাজ। গতবছরও এই ধরনের দুর্গা প্রতিমা দেখা গিয়েছিল বেশি। তবে এবার সেই বায়নাও তেমন নেই। বায়না থাকলেও মজুরি কম। তবে শিল্প টিকিয়ে রাখতে এবং নিজেদের দু’বেলা খাবার জোটাতে ওঁরা কাজ করে চলেছেন।
বাঁশ কিনে চ্যালা করে তৈরি করা হয় বাঁখারি। তারপর সেগুলি বেঁধে, নির্দিষ্ট নকশায় তৈরি করা হয় কাঠামো। তার ওপর কাগজ লাগানো, কলকার কাজ। পরিশ্রম আর পুঁজি এতটুকু কমেনি, বরং বেড়েছে। কিন্তু আয় কমে গিয়েছে তুলনায়। এমন কথাই উঠে এল গিরীশ পার্ক সংলগ্ন রাম বাগান এলাকার শিল্পীদের মুখে। মূলত, কোনও পুজো কমিটির থেকে সরাসরি বায়না পান না চালচিত্র-শিল্পীরা। তাঁদের কাছে বায়না আসে মৃৎশিল্পীদের থেকে। কুমোরটুলি থেকেও এবছর বায়না এসেছে, তবে আগের তুলনায় অনেক কম। শ্য়ামা মালিক নামে এক শিল্পীর কথায়, ‘বরং গতবছর এর চেয়ে বেশি বায়না পেয়েছিলাম।’
বাতাসে শরতের গন্ধ এলেই রাম বাগানের গলি ভরে ওঠে কুটিরশিল্পীদের ভিড়ে। ইতিউতি রাস্তার ওপরই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে তাঁরা। সপ্তাহখানেক হল, শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ। এক একটা চালচিত্র তৈরি করতে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ দিন। দাম মেলে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এদিকে কাঁচামাল কিনতেই চলে যাচ্ছে বেশিরভাগটাই। কাগজ থেকে পেরেক, বাঁশ হোক বা রঙ—দাম বেড়েছে সবেরই। মুখে খাবার তুলতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই করতে হচ্ছে কাজ। চরণ কাঠারি নামে এক শিল্পীর কথায়, ‘এবছর অনেক পুজো কমিটিরই বাজেট কম। ফলে মৃৎশিল্পীরাই তেমন বায়না পাচ্ছেন না। তাই আমাদেরও বায়না কম।’
করোনা মহামারী, লকডাউনের সাঁড়াশি চাপে সময় খারাপ চালচিত্র-শিল্পীদেরও। তাই শুধুমাত্র কর্মীদের ধরে রাখতে লাভ না রেখেই বায়না ধরছেন মালিকরা। কাজ না পেলে শিল্পীরা অন্য পেশায় চলে যেতে পারেন, সেই আশঙ্কার কথাই বললেন জ্যোতি সাঁতরা নামে এক শিল্পী। তাঁর কথায়, ‘রাজ্য সরকার আমাদের কথা ভাবে। লকডাউনে আমরাও বিনামূল্যে রেশন পেয়েছি। কিন্তু মরসুমেই যদি রোজগার না থাকে তাহলে সারাবছর পেট চলবে কীভাবে? তাই সরকারের কাছে আবেদন, যদি আমাদের কিছু আর্থিক সাহায্য করে তাহলে আর অন্য পেশা খুঁজতে হবে না।’