নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের শুরুতে একাধিক নক্ষত্রের পতন হয়েছে আমাদের দেশে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রয়াত হয়েছেন ভারতের সরস্বতী অর্থাৎ সুর সম্রাজ্ঞী তথা নাইটেঙ্গল, কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। প্রায় ১ মাস হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনেছেন তিনি। মাল্টিঅর্গ্যান ফেইলিওর হয়ে মারা যান লতা মঙ্গেশকর। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে অবসান হয়ে যায় বলিউডের একটা যুগের।
পঞ্চাশের দশক থেকেই বলিউডে রাজ তাঁর, দেশের সঙ্গীত মহলের সরস্বতীও বলা চলে তাঁকে। যার গান শুনবে আগামী চার প্রজন্ম। যাই হোক, শিল্পের মাধ্যমে আজন্ম বেঁচে থাকবেন তিনি আমাদের মধ্যে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। সঙ্গীতের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন তিনি। সম্প্রতি স্বরাঞ্জলি নামে লতা মঙ্গেশকরের একটি অধিবেশন চলাকালীন জনপ্রিয় সঞ্চালক এবং ভয়েসওভার শিল্পী হরিশ ভিমানি লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের একটি ঘটনা তুলে ধরেন প্রকাশ্যে। লতা মঙ্গেশকরের কন্ঠে ও এ আর রহমানের সুরে ‘দিল সে’-ছবির ‘জিয়া জলে’ গানটি তাঁর অত্যন্ত পছন্দের।
হরিশ ভিমানি ইন সার্চ অফ লতা মঙ্গেশকরে লিখেছিলেন যে, লতা মঙ্গেশকরের জিয়া জলে গানটি তাঁর খুব পছন্দের। এই গানটি একটি কনসার্টে গাওয়ার কথা ছিল লতা মঙ্গেশকরের। কিন্তু পুলিশ তা হতে দেয়নি। তাঁর কথায়, “আমার মনে আছে যে ‘জিয়া জলে’ গানটি একটি কনসার্টে বাজানো হয়েছিল। রাত তখন সাড়ে ১০টা বাজে, পুলিশ এসে বলল আর গানটি বাজানো যাবে না। আমি তাঁদের অনুরোধ করেছিলাম গানটি বাজানোর জন্য কিন্তু তাঁরা সম্মতি দেয়নি। যার ফলে গোটা সন্ধ্যেটা নষ্ট হয়ে যায় লতার, খুব বিরক্ত হয়েছিলেন তিনি, গান করতে দেওয়া হয় নি তাঁকে।” তখন হরিশ ভিমানি বলেছিলেন যে, লতা মঙ্গেশকরের কোনও গানকে ‘খারাপ’ হিসাবে বর্ণনা করা ভুল হবে।
প্লেব্যাক গানে লতা মঙ্গেশকর ছিলেন সঙ্গীত জগতের সব প্রজন্মের শক্তি। প্রায় সাতদশক দীর্ঘ কর্মজীবনে, তিনি আয়ে মেরে ওয়াতান কে লোগো, লাগ জা গেল, ইয়ে কাহান আগ হ্যায় হাম এবং পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়ার মতো একাধিক গানে তাঁর কণ্ঠ দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমী প্রতিভার অধিকারী। ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ এবং দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার সহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।