আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দু’বছর হতে চলল করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে গোটা বিশ্বজুড়ে ‘ত্রাহি-ত্রাহি’ রব। কার্যত অদৃশ্য শত্রুর দাপটে থমকে গিয়েছে জনজীবন। অচল হয়ে পড়েছে অর্থনীতির চাকা। ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার টিকাকরণ দ্রুতগতিতে চলছে। কিন্তু তাতেও খুব একটা স্বস্তি মিলছে না। বরং বৃহস্পতিবার দুঃসংবাদ শুনিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ আধিকারিক ব্রুস আইলওয়ার্ড। গোটা বিশ্ববাসীকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘দরিদ্র দেশগুলি প্রয়োজন অনুযায়ী করোনার টিকা পাচ্ছে না। ফলে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২২ সালেও করোনা মুক্ত হতে পারবে না বিশ্ব। আগামী বছরেও করোনার দাপট সহ্য করতে হবে একাধিক দেশকে।’
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকেই চিনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে সর্বপ্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তার পরে দু বছর ধরে কার্যত বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে দাপট দেখিয়ে চলছে ৬০ ন্যানোমিটারের অদৃশ্য শত্রু। প্রাণঘাতী ভাইরাসকে পরাস্ত করতে জোর কদমে টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে বিশ্বের একাধিক দেশে। কিন্তু টিকাকরণ নিয়েও বৈষম্য দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষ যেখানে টিকা পেয়েছেন, সেখানে আফ্রিকা মহাদেশের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশেরও কমসংখ্যক মানুষ এখন পর্যন্ত টিকার আওতায় এসেছেন। একাধিক গরিব দেশকে ইতিমধ্যেই করোনা টিকার এক কোটির বেশি ডোজ সরবরাহ করেছে ব্রিটেন। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলিতে মোট ১০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু গরিব দেশগুলি পর্যাপ্ত টিকা না পাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরেই বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকরা। বিশ্বের সব নাগরিক করোনা টিকা না পাওয়া পর্যন্ত আর্থিক দিক থেকে সমৃদ্ধশালী দেশগুলির কাছে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছিলেন ‘হু’ প্রধান টেডরস অ্যাডানাম গেব্রিয়েসাস।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক ব্রুস আইলওয়ার্ড ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, ‘টিকাদানের ক্ষেত্রে আমরা সঠিক পথে নেই। আমাদের সত্যিই এই কার্যক্রমকে গতিশীল করা দরকার। না হলে ২০২২ সালেও মারণ ভাইরাসের প্রকোপ থেকে মুক্ত হতে পারব না আমরা।’