নিজস্ব প্রতিনিধি, দুবাই: স্পেনের পরে এবার দুবাইয়ের শিল্পপতিদেরও বাংলায় বিনিয়োগের আর্জি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই বিনিয়োগের আগে একবার বাংলার মাটিতে গিয়ে নিজেদের চোখেই রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশ চাক্ষুস করার কথাও বলেছেন তিনি। আর বাংলার প্রশাসনিক প্রধানের ওই মন্তব্যের পরেই দ্য রিৎজ কার্লটন হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট রুমে উঠল হাততালির ঝড়।
বাংলায় বিনিয়োগ টানতে স্পেন ও দুবাইকে পাখির চোখ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১২ দিনের সফর শেষে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে শুক্রবার দ্য রিৎজ কার্লটন হোটেলে শিল্প সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, হর্ষ নেওটিয়া, কে কে বাঙুর, সুচরিতা বসুরা ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে পশ্চিমবঙ্গ কতটা বদলে গিয়েছে সেই ছবি তুলে ধরেন। দীর্ঘ ৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকে সিপিএম কীভাবে বাংলাকে শিল্পবন্ধ্যায় পরিণত করেছিল, তা সবার জানা। সেই শিল্পবন্ধ্যা বাংলা কীভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের নয়া গৌরবগাঁথা লিখছে তা উল্লেখ করেন। বিনিয়োগকারীদের কীভাবে দু’হাত ভরে সাহায্য করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, কীভাবে কর্মনাশা বনধের শিকল থেকে মুক্ত করেছে, সে গল্প শোনান।
দুবাইয়ের শিল্প সম্মেলনে হাজির শিল্পপতিদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘বাংলা এমন একটা জায়গা যেখানে বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য রয়েছে। সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে, সুখদুঃখের সাথী হয়। পদবি দেখে মেলামেশা হয না।’ এর পরেই শিল্পপতিদের বাংলায় বিনিয়োগের আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আসুন নিজের চোখে দেখে বাংলায় বিনিয়োগ করুন। এসে দেখে যান, বাংলায় কতটা শিল্পবান্ধব পরিবেশ রয়েছে। আমরা কেমন কাজ করছি আর কীভাবে কাজ করছি, তা দেখলেই বুঝতে পারবেন। আমি গরিব মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। আর তার জন্য চাই উন্নয়ন। আমরা চাই, আমাদের চাষিরা যেমন হাসবে, তেমনই শিল্পপতি ব্যবসায়ীরাও হাসবে। হিন্দু-মুসলমানের মতোই কৃষি ও শিল্প আমার কাছে দুই বোনের মতো।’ শিল্পবান্ধব পরিবেশের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার গত কয়েক বছরে কী-কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও তুলে ধরেন মমতা। জানান, তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্য সিলিকন ভ্যালির মতো হাব করা হয়েছে। পণ্য আদান-প্রদানে সুবিধার জন্য তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তেরি হচ্ছে। এশিয়ার বৃহত্তম কয়লাখনিও রয়েছে বাংলায়। প্রতিভার ঘাটতি নেই।’