নিজস্ব প্রতিনিধিঃ না মিলছে পর্যাপ্ত খাবার, না আছে জ্বালানি গ্যাস কিংবা তেল। ডিম, দুধ, পাউরুটির মতো সহজলভ্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়তে বাড়তে আজ প্রায় আকাশছোঁয়া। ফলে খাবারের থালা থেকে এই সমস্ত জিনিস বাদ দিতে হয়েছে অনেক আগেই। এমনকি সারাদিন বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার মতো ক্ষমতাও আর নেই। ফলে দিনের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাটাতে হচ্ছে মোমবাতির আলোতে। সবশেষে জানা যাচ্ছে অর্থ সংকটে সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় এবার বাড়ন্ত প্রয়োজনীয় ওষুধও। যে সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ওপর নির্ভর করে বেঁচে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ সেই সমস্ত ওষুধের অধিকাংশই আর মিলছে না শ্রীলঙ্কায়। এককথায় বলতে গেলে বেঁচে থাকার জন্য আরও কিছুই সহজলভ্য নেই লঙ্কার দেশে। ভয়াবহ অর্থ সংকটে জনজীবন সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায়।
জানা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় যে ভয়াবহ অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে তাতে দেশজুড়ে বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডারেও টান পড়েছে। মূলত সেই কারণেই এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কায় আমদানি এবং রপ্তানি সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ফলে ওষুধ, জ্বালানি তেলের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসও আর মিলছে না সেই দেশে। অর্থ সংকট শুরু হওয়ার প্রথম দিকেই শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ অভাব দেখা দিয়েছিল জ্বালানি গ্যাসে। ফলে রাতারাতি শ্রীলঙ্কার কয়েক হাজার কলকারখানা, বেকারি বন্ধ হয়ে যায়। এতদিন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ জ্বালানি গ্যাসের পরিবর্তে জ্বালানি তেল অর্থাৎ কেরোসিন তেল দিয়ে কাজ চালাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি জানা যাচ্ছে সেই তেলের ভাণ্ডারেও টান পড়েছে। এক লিটার কেরোসিন তেল সংগ্রহ করতে সাধারণ মানুষদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
এর পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, আমদানি, রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশে কয়লার অভাব দেখা দিয়েছে। এর জেরে বন্ধ হয়েছে একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদিত না হওয়ার কারণে ভয়াবহ বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবাও। জানা যাচ্ছে, দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পাওয়ার কাট শুরু হয়েছে এই দেশে। ফলে আলো জ্বালাতে মোমবাতিই শেষ ভরসা। এমনকি এই বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য শ্রীলঙ্কার বেশকিছু হাসপাতাল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে অপারেশনের দিনক্ষণ। বিদ্যুৎ না টাকায় কাগজ তৈরি হচ্ছে না। এর জেরে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে সমস্ত স্কুল কলেজের পরীক্ষা।