নিজস্ব প্রতিনিধি: জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্তদের নতুন করে বাড়ি গড়ে দেওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে ভোটের আগে যে ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। অসমে উৎসবের জন্য টাকা বরাদ্দে কমিশনের আপত্তি নেই। অথচ জলপাইগুড়িতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার টাকা দেওয়ার অনুমতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দেওয়া হল না। নির্বাচন কমিশন যে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছে, ফের একবার প্রমাণ মিলল।’
গত সোমবারই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সামনে তৃণমূল প্রতিনিধিদলের হেনস্থার প্রতিবাদ জানাতে রাজভবনে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিনই তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে জানিয়েছিলেন, নির্বাচন কমিশনের সামনে তৃণমূলের হেনস্থা নিয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হলো, তা জানতে ফের রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন। সেই মতো এদিন সন্ধে সোয়া সাতটা নাগাদ দলের সাত নেতা-নেত্রীকে নিয়ে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘ আমাদের দাবি ছিল জলপাইগুড়িতে ঝড়ে বিধ্বস্ত বাড়িগুলির বা পরিবারগুলির ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন অনুমতি যেন দেয়। রাজ্যপাল জানালেন এব্যাপারে উনি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও কথা হয়নি। বাকি দুই কমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাংলার সমস্যার কথা তিনি তাঁদের জানিয়েওছেন। কিন্তু তার পরেও বুধবার দুপুরে কমিশন রাজ্য সরকারকে জলপাইগুড়িতে বাড়ি বানানো যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এতেই স্পষ্ট মোদি সরকারের কাছে বাংলার রাজ্যপালের কোনও গুরুত্বই নেই। তাই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারও তাঁর ফোন তোলেন না।
আসলে তিনি বাংলার হয়ে দাবিদাওয়া জানাবেন, তাই তাঁর কথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’জলপাইগুড়িতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি বানানোর বিষয়ে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলেও বিজেপি শাসিত অসম সরকারকে বিহু উৎসব পালনের জন্য টাকা দেওয়ার অনুমতি কমিশন গত পরশু রাজ্যের ২০০০টি কমিটিকে কমিশন দেড় লক্ষ টাকা করে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন উৎসব পালনের জন্য এই টাকা দেওয়া হল। উৎসব নিয়ে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলার যখন প্রয়োজন, তখন কমিশন অনুমতি দিল না। কারণ বাংলায় বিজেপি সরকার নেই। অসমে রয়েছে। এর থেকেই প্রমাণিত, বিজেপি বাংলা বিরোধী।’
এদিন অভিষেক জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবার তিনি ধূপগুড়িতে সভা করতে যাচ্ছেন। সেখানে জলপাইগুড়িতে যাবেন এবং সভা করবেন ধূপগুড়িতে। সেখানে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ১৬০০ পরিবারের প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করবেন। সোমবার তৃণমূলের যে প্রতিনিধিরা দিল্লিতে কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন তাঁরাও ধূপগুড়ির সভায় থাকবেন এবং নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা শোনাবেন।