নিজস্ব প্রতিনিধি: কিছু দিন আগেই, বঙ্গসফরে এসেছিলেন তিনি। বীরভূমে দাঁড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির(BJP) জন্য রাজ্য থেকে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন। সেই সফরকালেই ছিল বাঙালি অন্যতম পার্বণ চড়ক সংক্রান্তি। ছিল নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন পয়লা বৈশাখ। বাঙালির সেই আবেগ উৎসবের মহুর্তটা বাংলাতেই কাটিয়েছিলেন তিনি। আবারও এসেছেন তিনি, বাংলার বুকে, বাঙালির আরও একটা আবেগের দিনে, ২৫শে বৈশাখী। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah)। গতকাল রাতেই তিনি পা রেখেছেন কলকাতায়। এদিন সকালেই সপার্ষদ পৌঁছে গেলেন জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে(Jorasanko Thakurbari)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের(Rabindranath Tagore) মূর্তিতে মাল্যদান করে ঘুরে দেখলেন ঠাকুরবাড়ি। সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।
আরও পড়ুন নীলকন্ঠ মন্দির ভেঙেই কী জামা মসজিদ, সমীক্ষা করবে ASI
এদিন সকালেই শাহ বাংলায় ট্যুইট করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিশ্বকবিকে। সেই ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, ‘বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতিবাদ তথা মানবতাবাদের আদর্শকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়ে ভারতীয় দর্শনকে এক পূর্ণ রূপ প্রদান করেন। তাঁর কালজয়ী রচনা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তিকে আরও দৃঢ় করে। সদা প্রেরণাদায়ী, এমন দূরদর্শী কবিকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।’ এদিন জোড়াসাঁকোর অন্দরমহল ঘুরে ঘুরে দেখার পাশাপাশি কবির স্মৃতিবিজড়িত আসবাব, নথি ঘুরে ঘুরে দেখেন। দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রোপোল সীমান্তে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। তার পর সন্ধ্যায় সায়েন্স সিটিতেও বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তবে তাঁর এই সফর ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়ছে। তাঁর সফর নিয়ে জোড়াসাঁকোতে দাঁড়িয়েই তীব্র সমালোচনা করেছেন কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। ঘটনাচক্রে এদিন শাহি সফরের জন্য জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির দরজা ২ ঘন্টার জন্য বন্ধ ছিল আমজনতা তথা রবীন্দ্রানুরাগীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন সমরেশ প্রয়াণে বাংলায় ট্যুইট শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রীর, নজরে উত্তর
মঙ্গলবার রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে সকালেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে যান ফিরহাদ। সেখানে রবীন্দ্রনাথের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। জোড়াসাঁকোয় শাহের পৌঁছনো নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে ক্ষোভ উগরে দেন ফিরহাদ। বলেন, ‘মণিপুর বিজেপির রাজ্য। উনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতি দাঙ্গা হচ্ছে সেখানে। লুঠপাট চলছে। প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। করা হয়েছে অগ্নিসংযোগ। সেখানে যাওয়ার দরকার ছিল ওঁর। অথচ সেখানে না গিয়ে, বাংলায় আসছেন। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। তাই রাজনীতি করছেন। ৩৫ হবে না ওঁদের। স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে। বাঙালির ঘরে যত ভাইবোন সব এক হোক, এক হোক। বাংলার মানুষ বিভেদের রাজনীতি মেনে নেন না। বাঙালির আবেগকে নাড়া দিতে পারবেন না ওঁরা। ২০২১-এও পারেননি। ২০২৪-এও পারবেন না।’