নিজস্ব প্রতিনিধি: না আর বাঁধ মানছে না বাঙালি। দুর্গাপুজোতে সবকিছু ভুলেই ঠাকুর দেখার ভিড় চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসকদের। বারবার সাবধান করলেও কেউ কারোর কথা শোনার নেই। একবছর দুর্গাপুজোতে বাড়িতে আটকে ছিল বাঙালি। কিন্তু আর নয়, করোনা থাকলেও ওসব মানতে চাইছে না বাঙালি। তাই পুজো মণ্ডপে ঢুঁ দিচ্ছে কাতারে কাতারে লোক। বাড়ছে চিন্তা, বাড়ছে করোনাও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে বেড়েছে করোনার দৈনিক সংক্রমণ। তাও শ্রীভূমির বুর্জ খলিফা দেখতে ও উত্তর থেকে দক্ষিণ সমানেই বাড়ছে ভিড়। আবহাওয়া দফতরের তরফে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও তা পাত্তা না দিয়েই মণ্ডপে মণ্ডপে বাড়ছে ভিড়। মহাসপ্তমীর রেকর্ড ভেঙ্গেও গিয়েছে, মহাঅষ্টমীতে।
উত্তরের বাগবাজার সার্বজনীন থেকে কলেজ স্কোয়ার কিংবা দক্ষিণের সুরুচি সংঘ থেকে নাকতলা, অষ্টমীর ভিড় উপচে পড়ল শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপে। আর এতেই বেলাগাম করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। মহাষ্টমীর অঞ্জলি আর মণ্ডপের ভোগ শেষ করেই প্যান্ডাল হপিংয়ের প্ল্যান ছকা হয়ে গিয়েছিল সকলেরই। সেইমতো কেউ পরিবারের সঙ্গে পৌঁছে যান দক্ষিণের হিট পুজো সুরুচি সংঘতে। এরপর একে একে চেতলা অগ্রনী, মুদিয়ালি, শিবমন্দির, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লী, দেশপ্রিয় পার্ক, হিন্দুস্থান পার্ক হয়ে সোজা একডালিয়া এভারগ্রীন। প্রশাসন কিংবা পুজো উদ্যক্তোরা বিশেষ ব্যবস্থা নিলেও উৎসাহী জনতার কাছে অসহায়। বারবার বিশেষজ্ঞরাই বারণ করেছেন করোনার তৃতীয় ঢেউ এখনও বাকি, অপেক্ষায় রয়েছে মারণরোগ থাবা বসানোর জন্য। কিন্তু কে কার কথা শোনে। তবে একা বুর্জ খলিফা অর্থাৎ শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের থিম দেখতেই মানুষের যে ঢল বিগত তিনদিন ধরেই দেখা যাচ্ছিল, মহাসপ্তমীর তুলনায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহাঅষ্টমীতে তা দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। করোনা বিধি মেনেই জেলার ক্লাব গুলি পুজো করলেও কলকাতায় চাকচিক্য ও জৌলুস ফিরেছে এবারের দুর্গাপুজোতে। তাই উপচে পড়েছে ভিড়। শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর একই চিত্র। মহাষষ্ঠীতে মানুষের ঢল করোনার বাড়বাড়ন্তের দিন মনে করাচ্ছে ফের। স্বাস্থ্য বিধি নেই, দূরত্ববিধি নেই, মাস্ক নেই হাতে ব্যবহার হচ্ছে না স্যানিটাইজার। বনগাঁ লোকালকে হার মানাচ্ছে কলকাতার ঠাকুর দেখার ভিড়।
আদালতের নির্দেশ ছিল যারা করোনার ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন তারা প্রবেশ করতে পারবেন মণ্ডপে। কিন্তু অশান্তি এড়াতেই সমস্ত পুজো মণ্ডপ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না সাধারণ দর্শনার্থীকে। আর তাই মণ্ডপের বাইরে নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব মেনে ঠাকুর দেখার জন্য মানুষের ভিড় বাড়ছেই। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের প্রতিটি মণ্ডপেই কমবেশি ভিড় রয়েছে।