নিজস্ব প্রতিনিধি: অঘটন এড়ানো হল নাকি আত্মসমীক্ষার পথ বন্ধ করে দেওয়া হল? এই প্রশ্নটাই উঠেছে বঙ্গ বিজেপির চিন্তন বৈঠকের(Chintan Baithak) পরে পরেই। কেননা কলকাতার ন্যাশানাল লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত এদিনের চিন্তন বৈঠকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হলই না দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে(Locket Chatterjee)। অথচ গত বুধবার এই লকেটই পুরভোটে বিজেপির(BJP) বিপর্যয় দেখে এক শব্দের টুইট করেছিলেন, যার অর্থ ছিল ‘আত্মসমীক্ষা’। সেই ‘আত্মসমীক্ষা’র উপদেশ যে তিনি বঙ্গ বিজেপির উদ্দেশ্যেই দিয়েছিলেন সেটা সকলেই বুঝেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন এদিনের চিন্তন বৈঠকে লকেট হয়তো কিছু কথা বলবেন। কেননা বঙ্গ(Bengal) বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছিলেন, বৈঠক ডাকা হয়েছে সকলের কথা শুনতে ও খোলামনে আলোচনা করতে। কিন্তু এদিন দেখা গেল ঠিক তার উল্টো ছবি। মত বিনিময়ের নামে শুধুই ভাষণবাজি। আর লকেট বসে দর্শকাসনে। উল্টো দিকে মঞ্চ আলো করে বসে আছেন দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, অগ্নিমিত্রা পল, সুকান্ত মজুমদার, অমিতাভ চক্রবর্তী, অমিত মালব্যরা।
কার্যত এদিনের ঘটনায় এটা পরিষ্কার বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব নিজেদের বিরুদ্ধে একতা কথাও শুনতে চান না। আর সেই কারনেই মত বিনিময়ের নামে শুধু ভাষণবাজির পথই তাঁরা বেছে নিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই চিন্তন বৈঠক ডাকা হয়েছিল তার উদ্দেশ্য আদৌ রূপায়িত হল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই। যদিও লকেট ঠিক কী বলতে চান বা বোঝাতে চান তা তিনি শুক্রবার রাতেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘আত্মবিশ্লেষণ করা দরকার। যে হার হয়েছে তা মাথা পেতে নেওয়া উচিত। বিজেপির সমস্ত কর্মী ও আমাদের আত্মবিশ্লেষণ করতে হবে। ভুল-ত্রুটি শোধরাতে হবে। একে অপরের উপর দোষ বা দায় চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। সংগঠনের কোথায় খামতি তা দেখতে হবে। হুগলিতে দলের ফল হতাশাজনক। যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা বলতে পারবেন কেন এমন হল। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সকলের সঙ্গে আমি কথা বলব। কে বিদ্রোহী এসব নিয়ে ভাবি না। সবাই আমার কাছে দলের কর্মী ও নেতা।’
লকেটের এই বক্তব্যের পরেই বঙ্গ বিজেপিতে অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই মনে করতে শুরু করে দিয়েছিলেন এদিনের চিন্তন বৈঠকে লকেট মুখ খুললে বঙ্গ বিজেপির পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও তীব্র অস্বস্তিতে পড়ে যাবে। কেননা সেক্ষেত্রে দলের কঙ্কালসার চেহারাটা তুলে ধরার পাশাপাশি গলদ কোথায়, সেটাই সামনে নিয়ে চলে আসতে পারেন লকেট। আর তা হল বাংলায় আবারও ধাক্কা খাবে বিজেপি। সেই কারণেই সম্ভবত এদিনের চিন্তন বৈঠকে লকেটকে ডেকে পাঠানো হলেও না তাঁকে মঞ্চে বসার জায়গা দেওয়া হয়েছে না তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। লকেট এদিন তাই শুধুই দর্শক।