নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের ৩ চিকিৎসকের কর্মকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলল। ওই ৩ চিকিৎসকের শব ব্যবচ্ছেদের বিশেষ প্রক্রিয়া স্থান পেল ব্রিটিশ জার্নালে। এমন প্রাপ্তিতে খুশি বঙ্গের চিকিৎসকরা।
কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর ব্যক্তির দেহের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা জানতে রাজ্যে শুরু হয় প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি (Pathological Autopsy)। সেই কাজ করতে গিয়ে সংক্রমিত মৃতের দেহ থেকে অ্যারোসল নির্গমন হয়ে যাতে পরিবেশে কোনও রকম সংক্রমণ ছড়াতে না পারে, সেজন্য এক বিশেষ পদ্ধতিতে শবদেহ ব্যবচ্ছেদ করেছিলেন ওই চিকিৎসকরা। সাধারণত কোনও দেহের ময়নাতদন্তের সময় থুতনির নিচ থেকে তলপেট পর্যন্ত লম্বা করে কাটতে হয়। এর পর বক্ষগহ্বরের পাঁজর কেটে ফুসফুস ও হৃদপিণ্ড বাইরে বের করা হয়। যার ফলে ওই দেহে যদি কোনও প্রকার সংক্রমণ থাকে তা বাইরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু বিশেষ পদ্ধতিতে মৃতদেহের পেটের উপরে ছোট করে কাটলে কাজ মিটে যায়। পেটের উপরে ছোট করে কেটে ডায়াফ্রামের ভিতর দিয়ে ফসুফুস ও হৃদপিণ্ড বের করে পরীক্ষা করা গিয়েছে। গবেষকদের মত, কম জায়গায় কাটতে যেমন সময় কম লাগবে তেমনি অ্যারোসল ছড়ানোর ঝুঁকি কম থাকে।
বঙ্গের চিকিৎসকদের শব ব্যবচ্ছেদের এই বিশেষ পদ্ধতির স্বীকৃতি মিলল ‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’-এ। শবদেহ ব্যবচ্ছেদের সেই পদ্ধতি প্রকাশিত হল ওই জার্নালে। যে তিন চিকিৎসক শব ব্যবচ্ছেদে এই নতুন ব্যবস্থার উদ্ভাবন করেছেন তাঁদের নাম যথাক্রমে সোমনাথ দাস, অংশুমান রায় এবং রীনা দাস। সোমনাথবাবু আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের (RG Kar Medical College) ফরেন্সিক মেডিসিনের প্রধান চিকিৎসক। চিকিৎসক অংশুমান রায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের (Raiganj Medical College) অ্যানাটমি বিভাগে কর্মরত। আর চিকিৎসক রীনা দাস নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (NRS Medical College) ফরেন্সিক বিভাগে কর্মরত।
এই বিষয়টি নিয়ে সোমনাথবাবু জানান, ‘অজানা রোগে শরীরের কোনও অঙ্গের ক্ষতি হয়ে মৃত্যু হচ্ছে তা জানা গেলে, পরবর্তীতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক সুবিধা হয়। কিন্তু অজানা রোগে মৃতের দেহের ব্যবচ্ছেদ করা কিংবা তা সৎকারে নির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দেওয়া রয়েছে। তাই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল। যা আগামী দিনে বিশ্বে গৃহীত হবে।’ কোনও অজানা রোগে যদি কারোর মৃত্যু হয়, তাহলে সেটিরও অটোপসি করা সম্ভব হবে এই বিশেষ পদ্ধতিতে।