নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনের জন্য প্রচারের সময়সীমা শেষ হতে এখন বাকি মাত্র দেড়দিন। শুক্রবারই প্রচারের শেষ দিন। তার আগে প্রচারের শেষ লগ্নে শহরের রাজপথে কার্যত ঝড় তুলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যের প্রধান যে বিরোধী দল সেই বিজেপি কিন্তু ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪২টিতে প্রার্থী দিয়েও কার্যত হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। শহরের অরররধেক এলাকায় তাঁরা প্রচারেই নামতে পারেনি। আর এই দশাই কার্যত বলে দিচ্ছে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হেরে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের সংগঠন ভূমিশয্যা নিয়েছে। সেখানে জয় আসবে ঠিক কটি ওয়ার্ডে তা নিয়ে এখন প্রশ্নও উঠে গিয়েছে। কিছুদিন আগেই অবশ্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মাত্র ১০টি ওয়ার্ডে জেতার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দিয়েছেন দলীয় প্রার্থীদের সামনে। তাতে লাভ অপেক্ষা ক্ষতিই বেশি হচ্ছে বলে অভিমত বঙ্গ বিজেপির নেতাকর্মীদের।
রাজ্য বিজেপির একাংশের অভিমত, কলকাতায় দলের সংগঠন কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচন ও তার পরে হয়ে যাওয়া ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ায় দলের কর্মীদের মধ্যেই গা-ছাড়া মনোভাব দেখা যাচ্ছে। তাঁরা কার্যত মাঠ ছেড়ে দিয়ে ঘরে হাত গুটিয়ে বসে আছেন। আবার বিজেপিরই অপর একটি অংশের অভিমত, তৃণমূলের সন্ত্রাসে কর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচার করতে পারছে না। যদিও পাল্টা মতও শোনা যাচ্ছে। বামেরা বিধানসভা থেকে নিশ্চিহ্ন হইয়ে গেলেও তাঁদের সংগঠন পুরোপুরি ধ্বসে যায়নি। বরঞ্চ তাঁরা সংগঠনের জোরেই শহরের প্রায় সব ওয়ার্ডেই প্রচার করছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়েও প্রচার করছে। তাই তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য প্রচার করা যাচ্ছে না এমন দাবি ধোপে টেকে না। সব থেকে বড় কথা, বিজেপিকে ঘিরে আমজনতার আগ্রহ অনেকটাই কমে গিয়েছে। বাঙালির কাছে, কলকাতাবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার যে, বিজেপির হাত ধরে আর যাই হোক, নতুন করে কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়।
এবারের কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচনে কার্যত প্রায় ১০০টি ওয়ার্ডে বিজেপির প্রচারে কোনও হইচই দেখা যায়নি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বেশ কিছু ওয়ার্ডে গিয়ে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে র্যালি বা সভা করলেও তার সংখ্যা ৭০ও পার হয়নি। শোনা গিয়েছিল, বিজেপির প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করতে কলকাতায় আসবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও গিরিরাজ সিংহ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রামকৃপাল যাদব, সুভাষ সরকার, শান্তনু ঠাকুর, নিশীথ প্রমাণিকের মতো দলের তারকা প্রচারকরা। কিন্তু কোথায় কী, একজনেরও টিকির দেখাও মেলেনি বুধবার রাত পর্যন্ত। আর এই ছন্নছাড়া দশাই বলে দিচ্ছে এবারের পুরভোটে বিজেপির প্রাপ্তি কী হতে চলেছে। মীনাদেবী পুরোহিত ছাড়া বিজেপির কোনও প্রার্থীই শিয়োওর শট নয়।