নিজস্ব প্রতিনিধি: কে না জানে ভোটে লড়াই(Fight a Election) করতে ট্যাঁকের জোর লাগে! কিন্তু সেই ট্যাঁকটাই যদি খালি থাকে তাহলে ভোটে লড়াইটা হবে কীভাবে? ইলেক্টোরাল বন্ডের(Electoral Bond) মাধ্যমে যখন পদ্মের ঘরে কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে, তখনও সেই টাকার নাগাল পাননি বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) বুথস্তরের কর্মীরা। কেননা দক্ষিণবঙ্গের(South Bengal) প্রায় সব লোকসভা কেন্দ্র থেকেই অভিযোগ কানে আসছে যে, ভোটপ্রচারের জন্য দলের বুথস্তরে টাকাই পাঠায়নি বিজেপি নেতৃত্ব। ইলেক্টোরাল বন্ডের পাশাপাশি নানা তথ্য বলে দিচ্ছে, বিশ্বের ধনী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে অন্যতম হল এ দেশের বিজেপি। অথচ সেই বিজেপিই কিনা, ২৪’র ভোটে বাংলার মাটিতে লড়াই করার জন্য নীচুতলার কর্মীদের(Booth Workers) ভোটপ্রচারের জন্য কোনও টাকাপয়সা দিচ্ছে না। অন্তত এমনই অভিযোগ উঠেছে। তবে সেই টাকা কেন আটকেছে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে দলেরই নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে। কেউ দাবি করছেন, টাকা আটকেছেন রাজ্য নেতৃত্ব, আবার কেউ দাবি করছেন টাকা আটকেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
ভোট মানেও ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের পিছনে খরচ। তাই বাইরেও ভোট মরশুমে নানা খাতে খরচ করতে হয় রাজনৈতিক দলগুলিকে। অথচ দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ লোকসভা কেন্দ্র থেকে অভিযোগ আসছে যে বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত বুথ পিছু ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে ভোট প্রচারের জন্য। যদিও দলের রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, বুথ পিছু ভোট প্রচারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫ হাজার টাকা করে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যেখানে বুথ পিছু ৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হচ্ছে ভোটপ্রচারের জন্য সেখানে কেন কর্মীদের হাতে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে গিয়ে পৌঁছাছে? বাকি টাকা কোথায় যাচ্ছে আর কার পকেটে যাচ্ছে। বিজেপির নীচুতলার কর্মীদের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও ঠিক এই ভাবেই দলের টাকা লুঠ করেছেন দলের কিছু নেতা। এবারেও সেটাই হচ্ছে। যেখানে তবু বুথ কমিটি আছে সেখানে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা অবধি আসছে। যেখানে সেটাও নেই সেই টাকাটাও এসে পৌঁছাছে না। অন্য কারও পকেটে ঢুকে যাচ্ছে। অভিযোগ বিজেপির নীচুতলার কর্মীদেরই।
ভোট মরশুমে বড় রাজনৈতিক সভার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় ছোট ছোট ঘরোয়া মিটিংগুলি। যা ভোটবাজারে রাজনৈতিক হিসাব নিকেশে সাহায্য করে। কিন্তু সেই কর্মসূচিতেই হোঁচট খাচ্ছে বাংলার বিজেপির কর্মীরা। কারণ টাকা খরচের ব্যাপারে কার্যত হাত তুলে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। মণ্ডল সভাপতির হাত দিয়ে বুথে বুথে টাকা পাঠিয়েছে নেতৃত্ব। সেগুলি ছিল মূলত দেওয়ার লিখন, ফ্ল্যাগ ও ফেস্টুনের জন্যই। কিন্তু তারপর আর কোনও টাকা পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ কর্মীদের। পদ্মশিবিরের নীচুতলার কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের দলের নেতৃত্ব বুঝছে না যে ভোট করাতে খরচ হয়। কারণ শুধুমাত্র বুথে দেওয়াল লিখলে কিংবা পতাকাটা টাঙালেই হয়ে যায় না। নেতৃত্বের থেকে আর্থিক সাহায্য সেরকম আসছে না। নিজেদের পকেট থেকে কে আর কত খরচ করবে। পদ্মকর্মীদের দাবি, রাজ্যের সংখ্যালঘু এলাকায় তাঁদের দলের কোনও সংগঠন নেই। তাই সেখানে টাকা পাঠানো হবে না সেটাই স্বাভাবিক। তাই আশা তাঁরা আশা করেছিলেন হিন্দু প্রভাবিত বা অধ্যুষিত বুথগুলোতে অন্তত পর্যাপ্ত টাকা পাঠানো হবে। কিন্তু সেখানেও বালি। বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর, ভোট করাতে শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে কয়েক কোটি টাকা এসেছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। যদিও টাকার পরিমাণ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। তারপরেও সেই টাকা গিয়ে পৌঁছাছে না দলেরই নীচুতলার কর্মীদের কাছে।