নিজস্ব প্রতিনিধি: বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরও পরপর উপনির্বাচনেও লজ্জাজনক হার। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার পুরভোটে প্রার্থীতালিকা তৈরি করেছে বিজেপি। ১৪৪ জনের তালিকায় ৯ জন সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে স্থান দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য্য সোমবার প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর দাবি করেন, বিজেপি সর্বভারতীয় দল, কোনও এক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। বিজেপি সকল ভারতবাসীর। ফলে সংখ্যালঘুরা বিজেপি প্রার্থী হবে না কেন?
কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন বাংলার এক প্রাচীন প্রবাদ, ঠেলার নাম বাবাজি! একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি কয়েকজন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে টিকিট দিয়েছিল। তবে সেটা শতাংশের বিচারে একেবারেই নগন্য। কিন্তু কলকাতা পুরনিগমের ভোটে ১৪৪ ওয়ার্ডে ৯ জন সংখ্যালঘু প্রার্থী দিল বঙ্গ বিজেপি। যা কার্যত নজিরবিহীন।
কলকাতা পুরভোটে বিজেপির প্রার্থীতালিকা দেখলেই বোঝা যাবে মূলত পুরোনো নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ছেড়ে রাতারাতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা-নেত্রীদের টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। তাতে স্থানীয়স্তরে ব্যপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল বিজেপির অন্দরে। বহু এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছিল প্রার্থীদের মেনে নিতে না পেরে। এবার সেই ভুল করেনি বিজেপি। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ছে সংখ্যালঘু প্রার্থীদের উপস্থিতি। মূলত যে যে এলাকায় মুসলিম ভোটার বেশি, সেই এলাকায় ওই সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি।
যেমন জোড়াসাঁকো বিধানসভা এলাকার ৩৭ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী করেছে যথাক্রমে শেখ মৌসুমী এবং মহঃ জাহাঙ্গীরকে। আবার বেলেঘাটার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহঃ মুখতারকে প্রার্থী করে চমক দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মেটিয়াবুরুজের সংখ্যালঘু অধুষ্যিত এলাকায় ১৩৮, ১৩৯ ও ১৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি তিন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে প্রার্থী করেছে। ১৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে জানিতা নাজমিন, ১৩৯ নম্বরে মেহজাবিন খাতুন এবং ১৪০ নম্বর ওয়ার্ডে মহঃ সালাউদ্দিন প্রার্থী হয়েছেন। মেটিয়াবুরুজ এলাকায় কলকাতা পোর্ট বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেও মুসলিম প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। এই ওয়ার্ডে টিকিট পেয়েছেন মমতাজ আলি। দেখা যাচ্ছে, বেশি সংখ্যায় মুসলিম মহিলাদের টিকিট দিয়ে শাসকদলকে টেক্কা দিতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি।