নিজস্ব প্রতিনিধি: বিধানসভা ভোটের সময়ে কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনায় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের হলফনামা তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, গুলিকাণ্ডের তদন্তে সিআইডি তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। আর কেন গুলি চালাল কেন্দ্রীয় বাহিনী, তা হলফনামায় উল্লেখ করবে কেন্দ্র। আগামী নভেম্বরে মামলার পরবর্তী শুনানি।
বিধানসভার চতুর্থ দফার ভোটের দিন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের শীতলকুচি। জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথে অশান্তি শুরু হয়। গণ্ডগোল থামাতে গিয়ে নির্বিচারে গুলি চালায় সিআইএসএফের জওয়ানরা। ওই গুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হন আরও চারজন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি। রাজনৈতিক তরজায় জড়িয়ে পড়ে রাজ্যের শাসকদল ও বিজেপি। গুলি চালানোর সমালোচনায় সরব হয় তৃণমূল নেতৃত্ব। উল্টোদিকে গুলি চালানোকে খুল্লামখুল্লা সমর্থন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরা।
রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই তদন্তের ভার সিআইডি’র হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সিআইডি-র অনুমান, বুথ লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। দরজা ভেদ করে সেই গুলি লাগে ব্ল্যাকবোর্ডে! এমনকী, ব্ল্যাকবোর্ডে একটি চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিকের ব্যালিস্টিক টিমের সদস্যরা। ভবানীভবনে কোচবিহারের তৎকালীন পুলিশ সুপার দেবাশিস ধরকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন সিআইডি-র তদন্তকারীরা।
শীতলকুচির গুলিকাণ্ড নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। এদিন সেই মামলার শুনানিতে রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে হলফনামা তলব করল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হল, ‘সিআইডি-র তদন্তে কতটা অগ্রগতি হল’? আর সিআইএসএফ কোন পরিস্থিতিতে গুলি চালিয়েছিল, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে কেন্দ্রকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।