নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত দেশের পঞ্চায়েতিরাজ পরিচালনা করতে কেমন খরচ হচ্ছে, আয়ই বা হচ্ছে কতটা—এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সামনে এনেছে Reserve Bank of India বা RBI। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২২-এর তুলনায় গত আর্থিক বছরে গড়ে ৭ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫৩২ টাকা করে কম পেয়েছে এরাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত(Gram Panchayat)। কেন্দ্রের কাছ থেকে Revenue Grant হিসেবে যে টাকা আসে, সেই খাতেই বসানো হয়েছে কোপ। মোট অঙ্কটা ২৬০ কোটিরও বেশি। বাংলায়(Bengal) মোট ৩ হাজার ৩৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। সেই সব গ্রাম পঞ্চায়েতের সার্বিক আয়-ব্যয়ের রিপোর্ট পেশ করেছে RBI। সেই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে বাংলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে Revenue Receipt বা খুচরো খাতে আয় হয়েছে গড়ে প্রায় ৫৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ধরা আছে কর বাবদ রাজস্ব খাতে আদায়, কর ছাড়া অন্যান্য খাতে আদায় এবং Grant in Aid বা অনুদান। এই শেষ খাতটিকে বিভক্ত করা হয়েছে তিনটি ভাগে— কেন্দ্রীয় সরকারি, রাজ্য সরকারি এবং অন্য কোনও প্রাতিষ্ঠানিক অনুদান। আর সেখানেই উঠে এসেছে বাংলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে কেন্দ্রের বঞ্চনা।
RBI’র রিপোর্ট বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বাংলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে কেন্দ্রীয় অনুদান এসেছে গড়ে ৫৬ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। অথচ তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০২১-২২ আর্থিক বছরে তা ছিল প্রায় ৬৪ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ, পঞ্চায়েত পিছু গড়ে প্রায় ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা অনুদান কমেছে। সামগ্রিক হিসেব কষলে সেই অঙ্ক গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৬২ কোটি টাকায়। বাংলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির রেভিনিউ বা খুচরো খাতে খরচের হিসেবও পেশ করেছে RBI। তারা জানাচ্ছে, এই খাতে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে গড়ে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। বাংলাকে ভাতে মারার লক্ষ্যে কেন্দ্র সরকার একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অধীনে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রের থেকে বাংলার বকেয়ার পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকায়। এর মধ্যে শুধুমাত্র ১০০ দিনের কাজের টাকাই বাকি আছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) এই বকেয়া টাকার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কলকাতায় ধর্নাতেও বসতে চলেছেন। যদিও সেই বকেয়া টাকা মিলবে কিনা তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়ে গিয়েছে।