নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সঙ্গে বারবার সংঘাতে গিয়েছেন বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তবে এবারের মাত্রাটা ছাড়িয়ে গিয়েছে বারবার নিজেকে সর্বের সর্বা দেখানোর জন্য। আর এতেই রাজ্যের সঙ্গে ফের সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন রাজ্যপাল ধনকড়। গত সপ্তাহেই রাজভবন থেকে একটি বার্তা গিয়েছে বিধানসভার সচিবালয়ে। সেই বার্তাতে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, এরপর থেকে নির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল।
কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবিধানিক ভাবে লোকসভার ক্ষেত্রে সাংসদদের শপথগ্রহণ করানোর দায়িত্ব দেশের রাষ্ট্রপতির। রাজ্য বিধানসভার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব পান রাজ্যের রাজ্যপাল। কিন্তু এতদিন স্পিকার নির্বাচন হয়ে গেলে উপনির্বাচন কিংবা যে কোনও নির্বাচনে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব ছিল। কিন্তু রাজ্যপাল সেই রীতি ভেঙেই জানিয়েছেন, তিনিই এবার যে কোনও বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাবেন। আর এতেই ক্ষুদ্ধ পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায় ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভায় মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেন পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায় ও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। একরকম ভাবে তারা জানিয়েই দিয়েছেন রাজভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ বাক্য পাঠ হলে তারা হাজির থাকবেন না।
সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল। দেখা যায় প্রায় সব ক্ষেত্রেই সাংসদ বিধায়কদের শপথগ্রহণের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপাল দিয়ে দেন তাঁর মনোনীত ব্যক্তিকে। তাই সাধারণ লোকসভা বা বিধানসভার নির্বাচনে জয়ী হলে সাংসদ বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করান প্রোটেম স্পিকার। স্পিকার নির্বাচন হয়ে গেলে, লোকসভার ক্ষেত্রে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় অধ্যক্ষকেই। বিধানসভার ক্ষেত্রে রাজ্যপাল সেই দায়িত্ব দেন সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় সেই নিয়মের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। রাজভবন থেকে বিধানসভায় পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে, সংবিধানের ১৮৮ ধারা অনুযায়ী শপথগ্রহণ নিয়ে রাজ্যপাল এত দিন যে অধিকার স্পিকারকে দিয়েছিলেন, তা ফিরিয়ে নেওয়া হবে। জানা গিয়েছে আজকের আলোচনায় পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায়, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ রাজভবনে হতে দেবেন না।
দু’দিন বাদেই মহালয়া, তারপরেই রাজ্যে পুজোর আমেজ তাই মমতার শপথগ্রহণ কবে হবে তাই নিয়ে আজও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি বলেই জানা গিয়েছে। তবে আগামী বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নিতে পারেন।