নিজস্ব প্রতিনিধি: আশা ছিল, স্বপ্ন ছিল, মানুষ মেরে সাংসদ হবো। আজ সেই সব স্বপ্ন ভেসে গেল, ভেঙে গেল, হারিয়ে গেল। চাকরি? সে তো আগেই গিয়েছে হারিয়ে। সুপ্রিম কোর্ট আজ দয়াও করল না। বলুন দেখি কার কথা বলছি? বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের(Birbhum Constituency) বিজেপি প্রার্থী(BJP Candidate) দেবাশিষ ধরের(Debasish Dhar)। এদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার তাঁর আবেদন নাকচ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)। যার অর্থ ২৪’র ভোটে(Loksabha Election 2024) অন্তত লড়াইয়ের ময়দানে থাকছে না ধরবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে সব থেকে বড় অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তিনিই কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার থাকার সময়ে শীতলকুচির বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালাবার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবার বিজেপি তাঁকে প্রার্থীও করেছিল। কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না। ভোটের ময়দান থেকেই সরে যেতে হচ্ছে দেবাশিষকে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন আইপিএস দেবাশিষ ধর। শীতলকুচি কাণ্ডের পর তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। পরে সাসপেনশন প্রত্যাহার হলেও কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে রাখা হয় তাঁকে। সেই আইপিএস অফিসার আচমকা ইস্তফা দিয়ে রাজনৈতিক ইনিংস শুরু করেন। ২০২৪ সালে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিট পান। তবে তাঁর মনোনয়ন যে বাতিল হতে পারে তার ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। পরবর্তীতে আশঙ্কা সত্যি করে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায় তাঁর। মনোনয়ন বাতিলের পর কলকাতা হাইকোটের দ্বারস্থ হন দেবাশিষ ধর। তবে তাঁর আবেদন গ্রহণই করেননি বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই মামলাই এদিন ফিরিয়ে দিল বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
এদিন দেবাশিষের মামলা শুনানির জন্য উঠলে শীর্ষ আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে জানায়, ‘আপনি সময় মতো ‘নো ডিউস’ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন জানাননি। মনোনয়নপত্র বাতিলের মুহূর্তে আবেদন জানিয়েছেন। আপনি তো সাধারণ মানুষ নন, আইপিএস। নিয়মকানুন জানার কথা ছিল। এক্ষেত্রে নির্বাচনী আধিকারিক এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই গ্রাহ্য হবে। এক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আদালতের কিছু করার নেই। আপনাকে কমিশনের কাছে আবেদন জানাতে হবে। এক্ষেত্রে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেটা তাঁরাই নেবেন।’ যদিও আইনজীবী মহলের ধারনা দেবাশিষবাবু আবেদন জানালেও সম্ভবত কমিশন এক্ষেত্রে সেভাবে সাড়া দেবে না। কেননা যে দলের প্রার্থী হয়ে তাঁর ভোটের মাঠে নামা, সেই পদ্ম শিবিরের কোনও নেতাই নেই তাঁর পাশে।