নিজস্ব প্রতিনিধি: এ যেন দলের কর্মী সমর্থকদের নিঃশব্দ বার্তা, ‘আমি তোমাদেরই লোক’। একইসঙ্গে বার্তা দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও, ‘আমি কাউকেই পরোয়া করি না’। আর তাঁর অনড় পদক্ষেপে এখন পাল্টা চরম অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছগে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP)। তিনি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। দলের পুরাতন রাজ্য কার্যালয় মুরলীধর সেন লেনের বাড়িতে বঙ্গ বিজেপির দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহার(Rahul Sinha) বসার জন্য দুটি আলাদা আলাদা ঘর ছিল। সেই দুটি ঘর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। আর তার জেরে বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠী কোন্দল তুঙ্গে উঠেছে। দিলীপ ঘোষের মতো বঙ্গ বিজেপির সফলতম সভাপতি ও দলে প্রভাবশালী নেতাকে কার্যত প্রকাশ্যে অপমান ও কোণঠাসা করার জন্যই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দলের কর্মী ও সমর্থকেরাই এখন দাবি করছেন। আর এই ঘটনা যে পদ্মশিবিরকে রাজ্য রাজনীতিতে আরও দুর্বল করে দিচ্ছে সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিতর্ক ধামা চাপা দিতে বঙ্গ বিজেপির কিছু নেতা চেষ্টা করেছিলেন দিলীপকে দলের নয়া রাজ্য কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে বসাতে। সেই অফিস আবার সল্টলেকে। কিন্তু দিলীপ যাননি। শুক্র বিকালে তিনি দলের পুরাতন রাজ্য কার্যালয়ে এসেই বসেন। তাঁর ঘরখানিতে এখন পা রাখার জায়গাও নেই। তাই দিলীপ বসেছিলেন সেই ঘরের পাশে থাকা অন্য একটি ঘরে যা আবার দলের বর্তমান রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর(Amitabh Chakrabarty) ঘর। সেই ঘরে পা রাখার আগেই দলের পুরাতন রাজ্য দফতরের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিজের অনুগামীদের সাফ জানিয়ে দেন দিলীপ যে, ‘আমি তো রাস্তায় বসে চা খাই। আমার বসার চিন্তা কী আছে।’ কার্যত সেই কথাতেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি রাস্তায় থাকা লোক, সাধারণ কর্মীদের নেতা। তাঁর ঘর না থাকলেও রাস্তায় বসেই সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
দিলীপের নিজেরও যুক্তি, সল্টলেকের পার্টি অফিসে গাড়ি ভাড়া করে সাধারণ কর্মীদের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু জেলার কর্মীরা সহজেই পুরনো রাজ্য দফতরে আসতে পারেন। তাই তিনি এখানেই বসবেন। তাঁর এই গান্ধিবাদী মনোভাবই এখন চরম অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে দলেরই রাজ্য নেতৃত্বকে। সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে ঝাঁ চকচকে নয়া পার্টি অফিসে না গিয়ে দিলীপ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকেও বার্তা পাঠিয়েছেন নিঃশব্দে, যে তাঁর বিরুদ্ধে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাই পদক্ষেপ করুক না কেন তাতে তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হবেন না। তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেই দলের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর লড়াই চালিয়ে যাবেন।