নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপিতে যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠেছে তাকে কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না দলীয় নেতৃত্ব। বরঞ্চ সময় যত গড়াচ্ছে ততই দলটির মধ্যে বিভাজন বাড়ছে। রবিবার দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে শোকজ নোটিস পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপির কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায়। সেই চিঠি হাতে পেয়ে রীতেশ তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। জয়প্রকাশবাবু অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে হাতে শোকজের নোটিস আসতেই তিনি রবি রাতে সোজা চলে যান শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে। সেখানে সারেন গোপন বৈঠকও। সূত্রের খবর শান্তনু তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আর এইসব নিয়েই সোম সকালে মুখ খুললেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
সোমবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে মর্নিং ওয়াক সেরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ। সেখানেই দলের অন্দরে এই শোকজ কাণ্ডের জেরে তিনি বলেন, ‘দলের অন্দরে কোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই। পরিবর্তনের হাওয়ায় একটু আওয়াজ হয়। সে হতেই পারে। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। পরিবর্তন মেনে নিতে সময় লাগে। সময় লাগবে। আর পার্টি যেকোনও সময়েই যেকোনও কর্মীকে শোকজ করতে পারে। যদি পার্টি মনে করে। তাতে কোনও অসুবিধার কিছু নেই। বাকিটা দলের ব্যাপার। দল বুঝে নেবে।’ দিলীপের এই মন্তব্যে পরিষ্কার বিক্ষুব্ধদের প্রতি তাঁর যেমন মদত নেই তেমনি বিদ্রোহীদের রেয়াত করতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির। রবিবার জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে রাজ্য বিজেপির কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায় দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের জেরে কারণ দর্শানোর যে চিঠি দিয়েছেন তাতে তিনি লিখেছেন, ‘কিছুদিন ধরে পার্টি বিরোধী বিবৃতি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া হয়েছে, যা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল। শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে এই কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হল। কেন দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হচ্ছে।’
এদিকে রবিবার শোকজের চিঠি পাওয়ার পরই জয়প্রকাশ মজুমদার সোজা চলে যান উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার ঠাকুরনগরে শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে। সেখানে দীর্ঘক্ষণ তিনি শান্তনুর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সব পরিস্থিতিতে জয়প্রকাশ-সহ সমস্ত বিক্ষুব্ধ নেতাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন শান্তনু। তবে এসবের মধ্যে জয়প্রকাশ ও রীতেশকে বার্তা দিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ওই দুই নেতাকে তিনি জানিয়েছেন, অবিলম্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করুন। অভিষেকের দরজা খোলা আছে আপনাদের জন্য। যদিও এই বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ওই দুই নেতা।