নিজস্ব প্রতিনিধি: ফ্ল্যাট, জমি, বাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে দিতে হয় স্ট্যাম্প ডিউটি(Stamp Duty)। যা আদতে কর(Tax)। চলতি বছরের জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) স্ট্যাম্প ডিউটি প্রদানের ক্ষেত্রে ছাড়ের ঘোষণা করেন। আগে রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে স্ট্যাম্প ডিউটি ছিল ৫ শতাংশ, শহরাঞ্চলে ছিল ৬ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসের প্রথমদিকে মুখ্যমন্ত্রী শহর ও গ্রাম দুটি ক্ষেত্রেই স্ট্যাম্প ডিউটির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। ওই ঘোষণার জেরে গ্রামাঞ্চলে স্ট্যাম্প ডিউটি দাঁড়ায় ৩ শতাংশ ও ৪ শতাংশ। এরপরেই পুজোর আগে সেপ্টেম্বর মাসে দেখা গেল স্ট্যাম্প ডিউটি প্রদান করতে এগিয়ে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। আর তার জেরে রাজ্য সরকার(West Bengal Government) সেপ্টেম্বর(September) মাসে রেকর্ড আয়ের মুখ দেখল। ওই মাসে রাজ্য সরকারের কোষাগারে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ৯৭০ কোটি ২৪ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৫০ টাকা ঢুকেছে।
নবান্ন(Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে আয় হয়েছিল ৭৪২ কোটি টাকা। কিন্তু এবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার জেরে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ এগিয়ে এসেছেন ছাড়ের সুযোগ নিয়ে তুলনামূলক ভাবে কম পয়সায় তাঁদের জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করিয়ে নিতে। সরকারি হিসাব বলছে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ২ লক্ষ ১৯ হাজার ১৫১টি জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রি করার ঘটনা ঘটেছে। আর তার জেরেই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সরকারের যে আয় হয়েছিল ২০২২ সালে সেই খাতেই সেপ্টেম্বর মাসে ২২৮ কোটি টাকা বেশি আয় হয়েছে। এই পরিসংখ্যানই কার্যত বলে দিচ্ছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর দেওয়া স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড়ের সুযোগ নিতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহু মানুষ তাঁদের জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, রেজিস্ট্রেশন করতে এগিয়ে এসেছেন। উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রী শুধু সেপ্টেম্বর মাসের জন্যই এই ছাড়ের সুযোগ দেননি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ছাড়ের সুযোগ পাবেন বাংলার মানুষ।
নবান্ন থেকে পাওয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০-’২১ আর্থিক বর্ষে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে রাজ্যের আয় হয়েছিল ৫,২৮০ কোটি টাকা। ২০২১-’২২ সালে এই খাতে রাজ্যের আয় হয়েছে ৭,১০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০-’২১ আর্থিক বর্ষে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে রাজ্যের আয় গত বছরই ১,৮২০ কোটি টাকা বেশি হয়েছিল। এবার চলতি বছরের জুলাই মাসে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ যে ২ শতাংশ ছাড়ের কথা ঘোষণা করেন তা কার্যকর হয় আগস্ট মাস থেকে। সেই হিসাবে এখন থেকে আরও আড়াই মাস এই সুযোগ পাবেন রাজ্যবাসী। তার জেরে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাঁদের জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রি করার সুযোগ পাবেন। তাই রাজ্যের আধিকারিকদের ধারনা চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য সরকার রেকর্ড পরিমাণ আয় করতে চলেছে স্ট্যাম্প ডিউটি থেকে।