নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের মার্চ মাসে বিধাননগর দক্ষিণ থানা এলাকার নাওভাঙার বাসিন্দা মোবিন খান ও মেহতাব বেগম নামে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের Special Task Force বা STF। তাঁদের জেরা করে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ২২ কোটি টাকার হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেছে। এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED বা Enforcement Directorate’র আধিকারিকেরা মনে করছেন এই ড্রাগের ব্যবসা(Drug Business) ছিল আদতে তাঁদের হাতে রেশন দুর্নীতির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের(Jyotipriya Mallik) ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের(Bakibur Rahaman)। সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। কেন এই সন্দেহ? কারণ ড্রাগ তৈরির কারখানা ছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা এলাকা যেখানের একসময়ের বিধায়ক ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। আবার তাঁর বাড়ি যে সল্টলেকে সেখানকারই নাওভাঙা এলাকায় ফ্ল্যাটে কিনে ড্রাগের কারবার চালাত মোবিন খান ও মেহতাব বেগম। আর তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকদের ধারনা এই ব্যবসা আদতে চালাতো বাকিবুরই। তবে তাতে জ্যোতিপ্রিয়র কোনও ভূমিকা আছে কিনা সেটাও এখন খতিয়ে দেখতে চান তাঁরা।
জানা গিয়েছে, মার্চ মাসে STF’র হাতে গ্রেফতার হওয়া মোবিন খান ও মেহতাব বেগম মাদকের পুরিয়া তৈরি করে কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় এজেন্ট মারফত তা পৌঁছে দিত। মোবিন ছাগলের ব্যবসা করত। সেই ব্যবসার আড়ালেই চালাত মাদকের কারবার। নাওভাঙার পাঁচতলার ফ্ল্যাট জুড়ে এই কারবার চালাত তারা। মাদক তৈরি হতো গাইঘাটার বিষ্ণুপুর গ্রামের একটি খামারবাড়িতে। সেখানে গড়ে উঠেছিল হেরোইন তৈরির আস্ত একটি কারখানা। সেখান থেকে ওই মাদক নিজেদের গাড়িতে করে ওই দম্পতি নিয়ে আসত নাওভাঙা এলাকায়। এ ভাবে প্রতি মাসে কয়েক কোটি টাকার মাদক কিনে আনত তারা। এখন ED আধিকারিকদের ধারনা এই ব্যবসায় যোগ ছিল বাকিবুরের। তাঁদের আরও অনুমান এই ব্যবসায় হয়তো জ্যোতিপ্রিয়’র যোগসূত্রও খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। যদিও এই নিয়ে এখনই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তাঁরা।
সল্টলেকের ওই দম্পতি ছাড়াও মাদকের ওই কারবারে জড়ত থাকার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২জন গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২জন মহিলা। একজনের নাম কাকলি রায়। মনে করা হচ্ছে কাকলি আদতে মিডলম্যানের ভূমিকা পালন করতেন। বাকি ১১জন এজেন্টের কাজ করত। মাদকের ওই কারবারিদের গ্রেফতার করা হলেও মাদক তৈরির কাঁচামাল যে বা যারা সরবরাহ করত, তাদের খোঁজ পাননি রাজ্যের গোয়েন্দারা। সূত্রে জানা গিয়েছে, ED’র আধিকারিকেরা এখন এই মামলাটি নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করে দিয়েছেন। হয়তো খুব শীঘ্রই এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ১২জনকে জেরাও করতে পারেন তাঁরা। প্রয়োজনে বাকিবুরের সঙ্গে মুখোমুখি বসানো হতে পারে কাকলিকেও।