নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা সময় ছিল, কলকাতার পুজো মানে প্রথমেই নাম উঠে আসত কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্কের। শহরতলী বা গ্রামাঞ্চল থেকে আসা মানুষ হাওড়া ও শিয়ালদা স্টেশনে নেমে মধ্য কলকাতার ঠাকুরই আগে দেখতেন। ওই রাস্তায় যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হত দর্শনার্থীদের ভিড়ের ঠেলায়। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে হারিয়ে গিয়েছে সেই চেনা ছবি। ক্রমশ জৌলুস হারিয়েছে সাবেক পুজোগুলি। করোনাকালে এবছর প্রায় মণ্ডপই ফাঁকাই থাকল পুজোর দিনগুলিতে।
দুর্গাপুজো মানেই কলকাতা। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে থাকা বাঙালি একবাক্যে এই কথা স্বীকার করে নেবেন। বনেদি রাজবাড়ির পুজোগুলি তো অবশ্যই জনপ্রিয়, কিন্তু কলকাতার নাম বেড়েছে বারোয়ারি পুজোগুলির জন্যই। আর এই তালিকায় কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্কের পাশাপাশি ছিল শিয়ালদহ রেলওয়ে অ্যাথলেটিক ক্লাব, ইন্টালি উদয়ন সংঘ, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার, পার্ক সার্কাস সর্বজনীন, মধ্য কলকাতা সর্বজনীন, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের মতো বেশ কয়েকটি পুজো। প্রত্যেকটি পুজোর নিজ নিজ কিছু বৈশিষ্ট্য ও চমক থাকে প্রতিবছর। এবছরও প্রতিটি কমিটিই পুজোর আয়োজন করেছিল। তবে সেই চমক যেন কোথাও হারিয়ে গিয়েছে। আর তাই মানুষও কম গিয়েছে এই সমস্ত মণ্ডপগুলিতে।
কোথাও থিমের পুজো হয় তো কোথাও আবার সাবেকিয়ানায় মোড়া থাকে মণ্ডপ থেকে প্রতিমা। এবছরও থিমের পুজোর আয়োজন করেছিল বেশ কয়েকটি কমিটি। কিন্তু তারপরেও লোক সমাগম খুবই কম। তবে ব্যতিক্রম কাঁকুড়গাছি যুবকবৃন্দ, বেলেঘাটা ৩৩ পল্লি অধিবাসীবৃন্দ, চোরবাগান, চালতাবাগান। এবছর দক্ষিণ কলকাতার পুজোগুলিতেও দর্শনার্থীদের সংখ্যা কমেছে। বরং পুজোয় ভিড় হয়েছে লেক টাউন, নিউটাউন, সল্টলেকের দিকে। তৃতীয়া থেকেই উপচে পড়েছে মানুষ। অন্যদিকে দর্শক হারিয়ে ক্রমশ ফিকে হয়ে যাচ্ছে মধ্য কলকাতার সাবেক পুজোগুলি।