27ºc, Haze
Sunday, 14th August, 2022 12:00 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: সেটা ২০০৯ সালের কথা। সদ্য সদ্য শেষ হয়েছে জমি আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামের(Nandigram) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সেই উপনির্বাচনে বাম প্রার্থী পরমানন্দ ভারতীকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাস্ত করে রাজ্য বিধানসভায় পা রেখেছেন শহীদ জননী ফিরোজা বিবি(Firoza Bibi)। ফিরোজার ছেলে শেখ ইমদাদুল ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে চটি পরা পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিল। ছেলের মৃত্যুর সেই ঘটনা আজও ভোলেননি ফিরোজা। সেবার বিধানসভায় পা রেখে শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই অধিবেশন কক্ষে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে(Buddhadeb Bhattacharya) দেখতে পেয়েই সোজা তাঁর সামনে চলে গিয়েছিলেন ফিরোজা বিবি। সজাসুজি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আমার ছেলেকে গুলি করে মারলেন কেন? আমার ছেলে কী দোষ করেছিল?’ ফিরোজার সেই প্রশ্নবাণে থতমত খেয়ে যান বর্ষীয়ান বাম নেতা তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এবার সেই ফিরজাই আবারও বিস্ফোরক হলেন শুভেন্দুকে নিয়ে।
সারদা-নারদা কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে(Suvendu Adhikari) গ্রেফতারের দাবি নিয়ে আজ অর্থাৎ সোমবার কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্স, হলদিয়া এবং কাঁথিতে সভা করছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার এই ইস্যুতেই রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল। সেই দলের নেতৃত্ব করবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। প্রতিনিধি দলে থাকবেন তাপস রায়, কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজার পাশাপাশি নন্দীগ্রামের শহীদজননীও। তার আগে এদিন হলদিয়ায় তৃণমূলের সভায় যোগ দেন ফিরোজা। সেখানেই তিনি শুভেন্দুকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। বলেন, ‘দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তখনই সেই দায়িত্ব আমি পালন করেছি। আবার কোনও দায়িত্ব দিলেও তা পালন করব। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করি। সেবার পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলাম। সেই সময় শুভেন্দুবাবু তৃণমূলে আসেননি। তৃণমূল করতাম বলেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আমার ছেলেকে গুলি করে মারা হয়েছিল। আর দল দায়িত্ব দিয়ে শুভেন্দুবাবুকে নন্দীগ্রামে পাঠিয়েছিল। তাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু কেউ দলের সঙ্গে বেইমানি করলে তাকে মাথায় তুলে আমি নাচতে পারব না!’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে এবার থেকে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের তরফে যেসব আন্দোলন করা হবে সেই সব আন্দোলনে প্রথম সারির মুখ হিসাবে তুলে আনা হবে শহীদজননী ফিরোজা বিবিকে। কলকাতাতেও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তৃণমূলের কোনও কর্মসূচি থাকলেও সেখানেও তুলে ধরা হবে ফিরোজাকে। একটা সময় শুভেন্দুর সঙ্গে ফিরোজার সম্পর্ক ভাল ছিল। তা ছিল মূলত নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই। কিন্তু শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়তেই দুইজনার মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। ফিরোজা বিবি এখন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক। দল তাঁকে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নামতে বললে তিনি যে কুন্ঠীত হবেন না এদিন সেটাই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।