নিজস্ব প্রতিনিধি: ওড়িশার(Orrisa) বালেশ্বরের(Baleshwar) কাছে বাহানাগা বাজার স্টেশনে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার মুখে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস(Coromondol Express)। সেই দুর্ঘটনা বাংলার(Bengal) শতাধিক মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এখনও অনেকেই নিখোঁজ। রাজ্যের মধ্যে সব থেকে বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলায়। সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩১। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাসন্তী(Basanti) ব্লকের উত্তর মোকামবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ছড়ানেখালি গ্রামেই মারা গিয়েছেন ৫জন। তাঁদের মধ্যে ৩জন আবার একই পরিবারের সদস্য। সম্পর্কে তাঁরা সব ভাই। মঙ্গলবার সেই পরিবারের(Gayen Family) সঙ্গে দেখা করতে ওই গ্রামে যান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose)। আর শুধু যে যাওয়া তাই নয়, কার্যত সেই পরিবারের কাছে তিনি কল্পতরু হয়ে গেলেন।
আরও পড়ুন পাহাড়ে বড় সাফল্য রাজ্যের, ঐক্যশ্রীর আওতায় ২৩ হাজার পড়ুয়া
করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ছড়ানেখালি গ্রামে যে ৫জন মারা গিয়েছেন তাঁরা হলেন হারান গায়েন (৫১), নিশিকান্ত গায়েন(৪০), দিবাকর গায়েন (৩৩), সঞ্জয় হালদার(২৪) ও বিকাশ হালদার(২৬ )। এদের মধ্যে প্রথম ৩জন ৩ ভাই। মঙ্গলবার রাজ্যপাল সেই গায়েন ভাইদের পরিবারের সঙ্গেই দেখা করতে যান। তাঁকে দেখেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন তিন সন্তান হারা বৃদ্ধা মা। রাজ্যপাল নিজেও বৃদ্ধার দু’হাত ধরেন। সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে রাজ্যপাল জানান, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে আগামী ৬ মাস তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার টাকা করে দেবেন। অর্থাৎ ৩ ভাইয়ের পরিবার আগামী ৬ মাস ধরে সেই টাকা পাবেন। প্রতি ভাইয়ের পরিবার পাবেন প্রতি মাসে ২ হাজার করে টাকা। সেই সঙ্গে ওই পরিবারকে রাজ্যপাল ৫০ হাজার টাকা এককালীন আর্থিক সাহায্যও করছেন। এর পাশাপাশি ৩ ভাইয়ের পারলৌকিক ও শ্রাদ্ধের কাজের জন্য সমস্ত খরচ রাজভবন বহণ করবেন বলেই তিনি জানান। রাজ্যপাল শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, এদিন ফল জামাকাপড় সঙ্গে করে নিয়ে গেয়েছিলেন শোকাহত পরিবারদের দেওয়ার জন্য। ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যপাল পুনরায় ফিরে আসেন কলকাতায়।
আরও পড়ুন বঙ্গ বিজেপিতে বড় ধাক্কা শুভেন্দুর, গুরুত্ব হ্রাস দিলীপেরও
উল্লেখ্য, দেনার টাকা শোধের পরিকল্পনা নিয়ে আর সংসারের হাল টানতে গায়েন পরিবারের তিন ভাই চলে যাচ্ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশে। উঠেছিলেন সেই অভিশপ্ত ট্রেনে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। সঙ্গে ছিলেন আরও দুই বন্ধু। ৫জনের জীবনই চিরতরে থামিয়ে দিয়েছে সেই অভিশপ্ত ট্রেন। রবি বিকালে সেই গ্রামেই ৫টি চিতা জ্বলে উঠেছিল একসঙ্গে। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে একই পরিবারের তিনটি ছেলেকেই। তিন ছেলেকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন মা। এখন গায়েন পরিবারের শুধুই আর্ত চিৎকার।