নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে বিয়ে(Marriage) হল ৭ পাকের সম্পর্ক। কিন্তু এখনকার দিনে আখছারই দেখা যাচ্ছে সেই সব বিয়ে ভাঙতে ৭ বছরও সময় নিচ্ছে না। তার অনেক আগেই ভেঙে যাচ্ছে বিয়ে। কার্যত শুধু বাংলা নয়, দেশজুড়েই বেড়ে চলেছে বিবাহ বিচ্ছেদ বা Divorce’র ঘটনা। শহরাঞ্চলে ও শিক্ষিত মেয়েদের মধ্যে তার প্রবণতা আবার সব থেকে বেশি। আর Divorce মানেই মেয়েদের তরফ ক্ষতিপূরণ ও খোরপোষের দাবি। কার্যত যা মাথা পেতে নিতে হয় ছেলেদের। সেই জায়গাতেই এবার সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) এক রায়ের কথা মনে করিয়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের(Jalpaiguri Circuit Bench) বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। একটি মামলায় তিনি কার্যত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শীর্ষ আদালতের গাইডলাইন অনুযায়ী খোরপোষের অঙ্ক যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বিবদমান দু’পক্ষেরই সম্পত্তি বিষয়ক হলফনামা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ স্বামীর কাছে খোরপোষ ও ক্ষতিপূরণ যে মহিলা দাবি করে আদালতে মামলা করবেন তাঁকে তাঁর আয় ও সম্পত্তির হিসাবও হলফনামা আকারে আদালতে জমা দিতে হবে। নাহলে তিনি ক্ষতিপূরণ ও খোরপোষ দাবি করতে পারবেন না।
আরও পড়ুন মমতার ‘মেধাশ্রী’র নাম নথিভুক্তকরণ শুরু, মানতে হবে এইসব বিধি
ঠিক কী হয়েছে? সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে বিবাহ বিচ্ছেদ বা Divorce সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয় এক ব্যক্তির তরফে। নিম্ন আদালত ওইন ব্যক্তিকে স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য খোরপোষ হিসাবে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছিল। ওই ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী উভয়ই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা বলে সেই মামলা পাঠানো হয় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। মামলাটি সেখানে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে ওঠে। সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারী ব্যক্তির তরফে তাঁর আইনজীবী জানান, নিম্ন আদালত প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে খোরপোষ দিতে বললেও এটা দেখেনি যে সেই টাকাটা কোথা থেকে আসবে। কেননা ওই ব্যক্তি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাই তাঁর পক্ষে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে স্ত্রীকে খোরপোষ হিসাবে দেওয়া সম্ভবই নয়। সেই সময় ওই মহিলার আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন যে ওই ব্যক্তির একটি চালকলও আছে। তখন ওই ব্যক্তির আইনজীবী পাল্টা জানান, চালকল থাকলেও দীর্ঘদিন ধরেই তা বন্ধ। সেখান থেকে তাঁর ১ পয়সাও আয় নেই।
আরও পড়ুন পরিষেবা পৌঁছে দিতে এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে Task Force
এই শুনানির পরেই বিচারপতি জানান, আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনও হলফনামা কোনও পক্ষই দেননি। আয় সংক্রান্ত হলফনামাও আদালতে জমা পড়েনি। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী বিবাহ বিবাদ সংক্রান্ত মামলায় উভয়পক্ষের হলফনামা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। উভয়ের তরফে হলফনামা জমা না পড়লে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে না। এরপরই নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে বিচারপতি তাঁর নির্দেশে জানান, উভয়পক্ষের সম্পত্তির হলফনামা গ্রহণ করে বিচারককে পুনরায় খোরপোষের অঙ্ক ঠিক করতে হবে। গোটা প্রক্রিয়া ছ’মাসের মধ্যে শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।