নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার বিধানসভা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বামেরা। ৩৪ বছর ধরে বাংলা শাসন করার পর ক্ষমতা হারাবার এক দশকের মধ্যেই বামেদের এই ভাবে বাংলার বিধানসভা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে এখনও বিস্তর আলোচনা হচ্ছে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে। অনেকেই হতবাক হয়েছেন এই ঘটনায়। তবে বাংলার বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র কিন্তু এই ঘটনায় বিন্দুমাত্র বিস্মিত হননি। বরঞ্চ তাঁর দাবি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলসুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামেদের কাছ থেকে তাঁদের বামপন্থাটাই কেড়ে নিয়েছেন। আর তার জেরেই বামেরা বাংলার বিধানসভা থেকে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বাংলার প্রথম সারির এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন লোপামুদ্রা মিত্র।
লোপা জানিয়েছেন, তিনি বড় হয়েছেন বামপন্থী পরিবারে। চিরদিনই তাই মানুষের কাছাকাছি, মানুষের মধ্যেই থাকতে চান। তবে আগামী দিনে তাঁকে রাজনীতির ময়দানে দেখতে পাওয়া যাবে এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই। বামপন্থীদের নির্বাচনী বিপর্যয়ে তিনি মোটেও অবাক নন। বরঞ্চ তাঁর মনে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব ধরনে বামপন্থীদের জায়গাটা নিয়ে নিয়েছেন। তাই বাংলার মানুষ সাবেক বামপন্থীদের টা টা বাই বাই বলে দিয়েছে। তাঁর সোজাসাপ্টা অভিমত, ‘আমি নিজে আদ্যপান্ত বামপন্থী পরিবারের মেয়ে। আমার বাবা-কাকা বামপন্থী মানসিকতার মানুষ ছিলেন। আমার শুরুও সেখান থেকেই। তাঁদের সমালোচনা করতে পারাও সেই মানসিকতা থেকেই। বাংলায় বামপন্থীদের অবস্থা শোচনীয়। সেটা খারাপই লাগে। কিন্তু এটা হওয়ারই ছিল। মনে পড়ে যায় বামফ্রন্টের কম্পিউটার বিরোধিতার কথা। কম্পিউটার কি আটকানো গেল? তখনই বুঝেছিলাম কথায় ও কাজে ফারাক হয়ে যাচ্ছে…স্বচ্ছতা নেই। আমাদের বর্তমান সরকার, বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব ধরনের মধ্যে দিয়ে বামপন্থীদের সেই জায়গাটা নিয়ে নিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে প্রকৃত বামপন্থী হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছেন। তাই সাবেক বামপন্থীদের নির্বাচনী বিপর্যয় ঘটেছে। এটাই হওয়ার ছিল।’