নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে করতে পদ্মশিবির(BJP) ভুলে গিয়েছে মানবিকতাকেও। একুশের ভোটে গোহারা হারের জ্বালা নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi), অমিত শাহদের(Amit Shah) গা থেকে এখনও মেটেনি। আর তাই ছলে বলে কৌশলে বাংলার(Bengal) মানুষকে ভাতে মারতে উঠে পড়ে লেগেছেন তাঁরা। আটকেছেন ১০০ দিনের কাজের টাকা, আটকেছেন স্বাস্থ্য খাতের টাকাও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকার পাশাপাশি বাংলায় জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের(National Health Mission) টাকাও আটকে দিয়েছেন তাঁরা। আর তার জেরেই বাংলায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৭০ হাজার আশাকর্মীর(Asha Workers) Incentive। এই ৭০ হাজার আশাকর্মীদের মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় কাজ করেন প্রায় ৬০ হাজার জন। শহরাঞ্চলের আশাকর্মীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়—প্রায় ১০ হাজার। এরাই এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। কিন্তু এদের পাশেই দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার।
বাংলার ৭০ হাজার আশাকর্মীরা ছড়িয়ে রয়েছেন রাজ্যের জেলায় জেলায়। সাগরদ্বীপ থেকে সান্দাকফু, প্রত্যন্ত সুন্দরবন থেকে অভিজাত বিধাননগর পর্যন্ত। তাঁদের Incentive বন্ধ হওয়া সরাসরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরই আঘাত নেমে এসেছে বলে মনে করছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ায় ওই টাকা রাজ্যই দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। কেন্দ্র টাকা বন্ধ করলেও যাতে এই আশাকর্মীরা আর্থিক ভাবে ধাক্কা না পান তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ করছেন। বাংলার আশাকর্মীরা গ্রাম হোক কী শহর, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মা ও শিশুদের চেক আপ, টিকাকরণ, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, যে কোনও জ্বরজারি, সুগার, প্রেসার মনিটরিং, ক্যান্সার চিহ্নিতকরণ, কুষ্ঠ, যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, সবই তাঁদের করতে হয়। সেজন্য তাঁরা প্রতি মাসে ৪৫০০ টাকা করে ভাতা পান। এছাড়া প্রত্যেকে কাজের হিসেব অনুযায়ী পান Incentive। কেউ পান ১৫০০ টাকা, তো কেউ ২ হাজার, কেউ বা ৩ হাজার, তো কেউ ৩৫০০টাকা।
রাজ্যের অভিযোগ, ছলে বলে কৌশলে কেন্দ্র আটকে রেখেছে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ১১০০ কোটি টাকা। তার জেরেই গত ২ মাস ধরে বন্ধ আশা কর্মীদের Incentive। কারণ ভাতার টাকা আসে রাজ্যের কোষাগার থেকে। Incentive দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় অর্থসাহায্য থেকে। তা বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার আশাকর্মী। এরা অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের Incentive পাননি। এখন প্রশ্ন, স্বাস্থ্য পরিষেবায় রাজনীতির আঁচ লাগবে কেন? রাজ্য বিজেপি’র নেতারাও বুঝতে পারছেন এই ঘটনা ব্যুমেরাং হতে পারে আগামী লোকসভা নির্বাচনে। তবে সেই ভোট রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তরফে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, আশাকর্মীদের বকেয়া Incentive’র টাকা রাজ্য সরকারই দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। তাঁরা তা শীঘ্রই পেয়ে যাবেন।