নিজস্ব প্রতিনিধি: আশা ছিল, কত স্বপ্ন ছিল। সব ভেঙে গেল, সব ভেসে গেল। লালপার্টির হার্মাদরাও পাড়ায় পাড়ায়, মোড়ে মোড়ে, অফিসে অফিসে বলতে শুরু করে দিয়েছেন, ‘৩-৪ লক্ষ লোক হবে’। সেই সব আপাতত চলে গেল ‘মায়ের ভোগে’। ‘লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠ’ অনুষ্ঠানে আসছেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। আর সেই সফর বাতিলের নেপথ্যে রয়েছে IB’র রিপোর্ট। তাতে জানানো হয়েছে বড়দিনের আবহে শীতের সকালে ব্রিগেডের মাঠে ১ লক্ষ তো দূর, ৮০ হাজার লোকও হবে না। কার্যত শাহি সভার মতোই সেই সভাও ফ্লপ হবে। আর তার জেরেই তড়িঘড়ি করে মঙ্গলবার রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়, সফর বাতিল প্রধানমন্ত্রীর। যদিও এদিন বেলা ১১টার সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) বৈঠক হচ্ছে। আর সেই বৈঠকের দিকেই এখন তাকিয়ে আছে বাংলা।
IB’র কী রিপোর্ট দিয়েছে? বস্তুত কলকাতার ধর্মতলায় শাহি সভা ফ্লপ হওয়ার পর থেকেই সতর্ক হয়ে গিয়েছিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তার জেরেই Intelligence Bureau বা IB-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এটা খতিয়ে দেখতে যে ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার(Kolkata) ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে(Brigade Parade Ground) ‘লক্ষ কন্ঠে গীতাপাঠ’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গেলে কী রকমের ভিড় হতে পারে তা জানাতে। সূত্রের দাবি, সেই ভিত্তিতেই IB জানিয়ে দেয়, বড়দিনের আবহে, শীতের সকালে, ছুটির মেজাজে, বাঙালি আগ্রহী নয় ব্রিগেডের সভায় ভিড় জমাতে। সেই সঙ্গে তাঁরা এটাও জানিয়ে দেয়, TET’র দিনে গায়ের জোরে সভা করার মানসিকতা রাজ্যবাসী ভাল ভাবে নেবে না। জেলায় জেলায় এই সভা নিয়ে সেভাবে কোনও প্রচারই হয়নি। কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন দিয়েই দায়িত্ব ঝেরে ফেলা হয়েছে। সব থেকে বড় কথা শাহি সভায় যে অব্যবস্থার মুখে বিজেপির কর্মী ও সমর্থকদের মুখে পড়তে হয়েছিল তা দেখে আর কেউ মোদির সভায় আসতে চাইছেন না। তাই সভায় ৮০ হাজারের ভিড়ও হবে কিনা সন্দেহ। কার্যত IB’র এই রিপোর্ট হাতে আসার পরেই মঙ্গলবার রাতেই প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফর বাতিল করা হয়।
তবে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা সফর বাতিল হলেও এদিন বেলা ১১টার সময়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দিল্লিতে নয়া সাংসদ ভবনে তাঁর যে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক ছিল তা থাকছে। এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার এই বৈঠকে তৃণমূলের তরফে হাজির থাকবন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ শতাব্দী রায়, সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক প্রমুখরা। বাংলার বকেয়া টাকা যাতে দ্রুত ছাড়া হয় তার জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রী সহ তৃণমূলের সাংসদরা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন। দেখার বিষয় এই অনুরোধ প্রধানমন্ত্রী কতখানি রাখতে সক্ষম হন। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই কলকাতা সফর বাতিলের জেরে রীতিমত চরম হতাশা নেমে এসেছে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) অন্দরে।