নিজস্ব প্রতিনিধি: দলের জন্য নবীন এবং প্রবীণ দুই গোষ্ঠীকেই প্রয়োজন। তাই সকলকে একসঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। দিলেন দলের নেতাকর্মী সকলকেই। এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মমতা যোগ দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার দেগঙ্গায়(Deganga) দলেরই কর্মীসভাতে। সেই সভার মঞ্চ থেকেই তিনি নবীন এবং প্রবীণ সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, ‘নিজেদের আরও সংগঠিত করতে হবে। ছাত্র যুবদের গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু, সিনিয়র লিডারদের যোগ্য মর্যাদা দিতে হবে। এটা বারবার বলছি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে, নতুন চাল আগে বাড়ে। সকলকে নিয়ে চলতে হবে।’ অর্থাৎ নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বকে কোনওভাবেই প্রশয় দিতে নারাজ তিনি।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের(TMC) অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষের(Kunal Ghosh) মন্তব্যের পর আদি-নব্য দ্বন্দ্ব আরও চরমে ওঠে। কুণাল বলেছিলেন, ‘কেউ যদি ভাবেন দেহত্যাগ না করলে পদত্যাগ করবেন না, তা হলে দলটা ক্রমশ সিপিএমের বৃদ্ধতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে।’ কুণালের সেই মন্তব্য দলের কেউ সরাসরি সমর্থন করেননি, আবার বিরোধিতাও করেননি। তবে আদি তৃণমূলের অনেক নেতানেত্রীরাই সেই মন্তব্যের দরুণ আঘাত পেয়েছিলেন। সেই বিতর্কের মাঝেই আবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) জানিয়েছিলেন, ‘দলে প্রবীণদের প্রয়োজন রয়েছে। তবে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা থাকা প্রয়োজন। বয়সের নিরিখে নবীন বা প্রবীণ নয়, পারফর্ম্যান্সের দিক থেকে যাঁরা যোগ্য তাঁদেরই প্রার্থী করা হবে।’ এই পরিস্থিতিতে বিতর্ক জল ঢালতে এবং নবীনদের মন চাঙ্গা করতে এবং প্রবীণদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের একসুরে বাঁধার বার্তা দিলেন মমতা।
দলের জন্য অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের যে প্রয়োজন রয়েছে, সেটাই এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সাফ জানিয়েছেন, ‘সিনিয়র লিডারদের মর্যাদা দিতে হবে! এটা আমি বার বার বলছি। পুরনো চাল কিন্তু ভাতে বাড়ে। আর নতুন চাল আগে বাড়ে। দুটো চালকেই আমার দরকার। স্থানীয় স্তরে কোনও নেতা যদি ভাবেন, তিনি বড় হয়ে গিয়েছেন, তা তৃণমূলে করা যাবে না। কোনও ঝগড়া বরদাস্ত করব না। স্থানীয় ঝগড়ার জন্য যে কর্মীরা ঘরে বসে রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনুন। নিজের ভাল করার জন্য তৃণমূল নয়। মানুষের ভাল করার জন্য তৃণমূল। কেউ কেউ নিজেকে কেউকেটা ভাবছেন। দল সব বিষয়ে নজর রাখছে। আমার নজরও রয়েছে। বয়স হয়ে যাচ্ছে। আরে বয়স আবার কী! মনের বয়সটাই আসল। এটা ঠিকই যে বয়স হলে কর্মক্ষমতা কমে। কিন্তু সেটা চাকরির ক্ষেত্রে। আমরা তো চাকরি করছি না। রাজনীতিকরা হলেন স্বেচ্ছাসেবকদের মতো। কর্মক্ষমতাই হল আসল। বয়স নয়।’