নিজস্ব প্রতিনিধি: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের(Aliah University) উপাচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা ও সেই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার দায়ে এবার গ্রেফতার(Arrest) হল ঘটনার মূল অভিযুক্ত গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল(Giyasuddin Mondol)। ঘটনার জেরে গিয়াসুদ্দিনের সঙ্গীদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। তাদেরও গ্রেফতার করা হবে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। আলিয়ার ওই ঘটনার জেরে রবিবার বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনে থাকা টেকনো সিটি থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে গিয়াসুদ্দিনকে। এই পদক্ষেপ যে নেওয়া হবে সেটা এদিন সকালের দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূল(TMC) সাংসদ সৌগত রায়। গিয়াসুদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পরে পরেই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও(Kunal Ghosh)।
দিন দুই আগে গিয়াসুদ্দিন তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে হুট করেই ঢুকে পড়েছিল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি মণ্ডলের ঘরে। সেখানে উপাচার্যকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি তাঁকে প্রাণে মারার হুমকিও দেয়। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার ভিডিও করে তা পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই ভিডিও ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। সেই ভিডিওতে উপাচার্যকে লক্ষ্য করে গিয়াসুদ্দিনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘গালে দুটো চড়িয়ে দেব। আমার চড়ে প্রচুর লাগে। যে ক’টা তোর ছেলে আছে জিজ্ঞেস করে নিবি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থার জন্য তুই দায়ী। আমি জেল-জরিমানার জন্য তৈরি। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা আছে।’ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পাঁচ পড়ুয়ার পিএইচডি-তে সুযোগ পাওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। গিয়াসুদ্দিন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া ভিডিও প্রসঙ্গে গিয়াসুদ্দিনের দাবি, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত উপাচার্য। তিনি পাঁচ পড়ুয়াকে অনৈতিক ভাবে পিএইচডি-তে সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা পরীক্ষা দিয়েছেন বটে। কিন্তু প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই। এ নিয়েই তারা ‘প্রতিবাদ’ জানাতে উপাচার্যে ঘরে গিয়েছিল।
ঘটনা হচ্ছে গিয়াসুদ্দিন ওই ঘটনা নিয়ে যে সাফাই দিক না কেন তার কুকীর্তিকে কেউই সমর্থন করছে না। বস্তুত শনিবার থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে আলিয়াকাণ্ডের ওই বিতর্কিত ভিডিও। রাজ্যের সর্বস্তরে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। ঘটনার জেরে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও। এদিন তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনা চূড়ান্ত নেক্কারজনক। কেউ তা সমর্থনও করছে না। বিরোধীদের অভিযোগ এটা নাকি তৃণমূলের পরিকল্পি চক্রান্ত। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগই নেই। অভিযুক্ত যুবককে অনেক আগেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গোটা ঘটনাটি এমন ভাবে পরিকল্পিত করা হয়েছে ও এমন ভাবে ভিডিও করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়া হয়েছে যাতে তা দেখে মনে হয় তৃণমূলের তরফেই ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আর এই কারণেই বিরোধীরা তৃণমূলকে আক্রমণ করছে। কিন্তু এই ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। আইন আইনের পথে চলবে। দোষীরা শাস্তি পাবে।’