নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘরেই ফিরে গেলেন ঘরের মেয়ে। কলকাতা(Kolkata) ছেড়ে ফিরে গেলেন কোলাঘাটে(Kolaghat)। তবে সঙ্গে নিয়ে গেলেন না মাথার চুল। কেননা সেটা তিনি প্রতিবাদস্বরূপ বিসর্জন দিয়ে এসেছেন কলকাতার রাজপথে। এক মাথা কালো চুল নিয়ে যে রাসমণি বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে আন্দোলন করতে কলকাতার রাজপথে চলে এসেছিলেন, গতকাল গোটা বাংলা(Bengal) যাকে মাথার চুল কেটে ফেলতে দেখেছিল, আজ সেই রাসমণী গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেলেন মাথায় একটা রুমাল বেঁধে। সেই অবস্থায় গ্রামে ঢুকতে দেখে কেউ হাসলেন, কেউ বা মন খারাপ করলেন। কিন্তু কেউই থেমে গেলেন না। সকলেই নিজের নিজের পথে এগিয়ে গেলেন। মন মরা রাসমণী শুধু মাথা ভর্তি কালো চুল হারিয়ে সকলের কাছেই যেন একঘরে হয়ে পড়লেন।
গতকাল কলকাতার ধর্মতলায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের কোদালিয়া গ্রামের মেয়ে রাসমণি পাত্র(Rasmani Patra) তথা SLST চাকরিপ্রার্থী(SLST Job Seeker) নিজের চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। নানা সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেই দৃশ্য দেখেছেন বাংলার সবাই। সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাসমণি একদমই একা। কেই নেই পাশে। আসলে গ্রামের মেয়ের স্বেচ্ছায় চুল কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেউই মনেপ্রাণে মেনে নিতে পারছেন না। সেই না মানার সিদ্ধান্তের আঁচ পাচ্ছেন রাসমণী নিজেও। তাই এদিন গ্রামের পাকা পথ ধরে নিজের বহু চেনা বাড়ির পথে ফিরতে গিয়েই বাঁকা মন্তব্যের মুখে পড়েছেন তিনি। শ্বশুর-শাশুড়ি এবং বরও মেনে নিতে পারেনি তাঁর চুল বিসর্জনের সিদ্ধান্ত। কার্যত জানিয়েই দিয়েছেন তাঁরা, সম্পর্ক রাখতে চান না। রাসমনীও তাই ফিরে এসেছেন বাপের বাড়িতে। কিছুটা অভিমানে, কিছুটা বাধ্য হয়ে।
চাকরির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন SLST-র প্রার্থীরা। শনিবার তাঁদের ধরনা ১০০০ দিনে পা দিয়েছিল। আর ওই দিনই মাথা কামিয়ে চাকরির জন্য কাতর আবেদন করেন রাসমণি। এক মাথা কালো চুল রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে দেখে চোখে জল এসেছিল অনেকেরই। সেই কাতর আর্জি পৌঁছেছিল রাজ্য শাসক দলের কাছেও। তড়িঘড়ি শাসক দলের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh) ছুটে গিয়েছিলেন ধর্না মঞ্চে। এরপর তাঁর মধ্যস্থতায় সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য রাজি হন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু(Bratya Basu)। এদিকে রাজনীতি, প্রতিবাদের বাইরে বেরিয়ে রবিবার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন রাসমণি। মাথা ঢাকা এক টুকরো বাঁধা কাপড়। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, চুল কেটে লাভ কী হল!