নিজস্ব প্রতিনিধি: পয়গম্বর বিতর্কে অশান্ত হয়ে ওঠে হাওড়া(Howrah) জেলার বিস্তীর্ন এলাকা। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় পাঁচলা এলাকা। সেই অশান্তির ঘটনা ঠেকাতে পুলিশের তরফে দোষীদের বিরুদ্ধে ধড়পাকড় তো চলেই, সঙ্গে জেলাজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সোমবার সকাল থেকে সেই ইন্টারনেট পরিষেবা আবারও চালু করা হলেও আগামী বুধবার পর্যন্ত পাঁচলা ও জগৎবল্লভপুর এলাকায় ১৪৪ ধারা বজায় রাখা হচ্ছে। তবে কিছুটা হলেও ওই ব্লক ছড়াও, ডোমজুড়(Domjur), সলপ, অঙ্কুরহাটি, সাঁতরাগাছি, উলুবেড়িয়া(Uluberia), বাগনানে পরিস্থিতি এদিন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আর এই অবস্থাতেই ডমজুড় ও উলুবেড়িয়ার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার যার জেরে হাওড়া জেলার কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হতে চলেছেন। ডোমজুড় ব্লক হাসপাতালে খোলা হচ্ছে ডায়ালিসিস সেন্টার এবং উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চালু হচ্ছে নিউরো টেলিমেডিসিন ট্রিটমেন্ট।
জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের পঞ্চায়েত সমিতি এবং স্থানীয় বিধায়কের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের প্রায় ৩০ লক্ষ টাকায় ডোমজুড় ব্লক হাসপাতালে খোলা হচ্ছে ডায়ালিসিস সেন্টার(Dialysis Centre)। ডোমজুড় ব্লক হাসপাতালে এই পরিষেবা চালু হলে হাওড়া গ্রামীণ এলাকার ৬টি ব্লকের কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। ডোমজুড়ের পাশাপাশি উদয়নারায়ণপুর, জগৎবল্লভপুর, আমতা, পাঁচলা ও সাঁকরাইল ব্লকের বাসিন্দারা এবার থেকে এখানেই ডায়ালিসিসের সুবিধা পাবেন। এই সব এলাকায় জনঘনত্ব যথেষ্ট বেশি হলেও কাছেপিঠে কোনও ডায়ালিসিস সেন্টার নেই। ডায়ালিসিসের জন্য ওই সব এলাকার মানুষদের কলকাতা বা হাওড়ার কোনও বেসরকারি হাসপাতালে নতুবা উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হয়। এই সমস্যা কাটাতে সাধারণ মানুষ ডোমজুড় ব্লক হাসপাতালেই ডায়ালিসিস সেন্টার তৈরির দাবি জানিয়েছিল। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি ডায়ালিসিস সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেয়। সেই মতো সমিতির তহবিল থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় নতুন ভবন নির্মাণ এবং পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা করে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি। পাশাপাশি জগৎবল্লভপুরের প্রাক্তন বিধায়ক আব্দুল গনি তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা দেন এই প্রকল্পের জন্য। সেই টাকাতেই এবার খোলা হচ্ছে ডায়ালিসিস সেন্টার।
অন্যদিকে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এবার নিউরো টেলিমেডিসিন ট্রিটমেন্ট(Neuro Telemedicine Treatment) চালু করা হচ্ছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল। কলকাতার দুটি নামী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। খুব শীঘ্রই এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে ইতিমধ্যে রাজ্যে টেলিমেডিসিন পরিষেবা চালু হয়েছে। এক্ষেত্রে সারা দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় স্থানে। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম চার ঘন্টা যে কোনও রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে খুবই দামী। সেই সময়ের মধ্যে রোগীকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে আনা হলে নিউরো টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে কলকাতার এসএসকেএম এবং বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজির চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো তাঁর চিকিৎসা শুরু হবে। ইতিমধ্যেই এই পরিষেবা চালুর জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসককে এই ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাকি সব চিকিৎসকদেরকেও দ্রুত প্রশিক্ষণ দেওয়া শেষ হবে। এই পরিষেবাটি চালু হয়ে গেলে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের আর অন্যত্র যেতে হবে না। এই হাসপাতালেই চিকিৎসা হবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহেই পরিষেবাটি চালু হয়ে যেতে পারে বলেই জানা গিয়েছে।