নিজস্ব প্রতিনিধি: অসুস্থ অবস্থাতেও কর্মে অবিচল ছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। গত ২৪ অক্টোবর শারীরিক অসুস্থতার জন্য এসএসকেএমে ভর্তি হন সুব্রত বাবু। তারপরেই সেখানে তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে থাকে তাঁর। আগের থেকেই সিওপিডির সমস্যা ছিল। তাই তাঁর দ্রুত চিকিৎসার জন্য উডবার্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই পাঁচ সদস্যের চিকিৎসকদের নিয়ে মেডিক্যাল টিম গড়ে শুরু হয় চিকিৎসা। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হৃদযন্ত্রে দুটি ব্লক ধরা পড়ে। তারপরেই স্টেন্ট বসে ও অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হয়। সুস্থ হতে থাকেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তখনই নিজের দফতরের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সই করতে দেখা যায় পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে। নিজের কর্মে অবিচল। সদা ব্যস্ত, সেটা চিকিৎসাধীন অবস্থাতেও ধরা পড়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা গিয়েছে নিজের দফতরের ফাইল সই করছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পর সাধারণ বেডে ট্রান্সফার করা হয় সুব্রত বাবুকে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন তিনি। এমনকি তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার বেশ খোশমেজাজে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ স্তব্ধ হয়ে যায় মনিটর। এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০২ নম্বর কেবিনে ভর্তি ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী মণিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বলেছিলেন তাঁর চপ-মুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে। এমনকি, হাসতে হাসতে চাউমিন খাওয়ার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছিলেন একবার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায়।
সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ আড্ডা ছেড়ে শৌচালয়ে যান সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ফিরে আসেন মিনিট দশেক পর। তারপর থেকেই একটু একটু করে অসুস্থ হতে থাকেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী মণিশঙ্কর চট্ট্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘প্রথমে দাদা জানান, তাঁর শরীরে একটা অস্বস্তি হচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন। মুহূর্তের মধ্যে হাসপাতালের বেডে বসে ঢলে পড়েন। ততক্ষণে বৌদি (ছন্দবাণী) বিপদ বুঝে চিৎকার করতে শুরু করেছেন— ডাক্তার ডেকে আন! ডাক্তার ডেকে আন! আমি দৌড়ে রিসেপশনে যাই। দাদার বুকে ব্যথার কথা জানাতেই জুনিয়র ডাক্তার আর নার্সরা ছুটে চলে আসেন। ঘরে এসে বুকে পাম্প করতেও শুরু করেন তাঁরা। একবার মনিটরে সামান্য সাড়া পাওয়া গিয়েছিল। বুকে পাম্প করার সময় দাদা একবার হাতও তুলেছিলেন। সেটাও দেখলাম। কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে আর দাদার কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। মনিটরও স্তব্ধ! যে সবুজ রেখাটা ওঠানামা করে, সেটা একেবারে স্থির হয়ে গেল!’