নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশে জুলাইয়ের সভায় তিনি যোগ দিতে পারেননি। জেলের বাইরে পা রাখার ছাড়পত্রও পাননি। কেজি কেজি ওজন কমে যাচ্ছে তাঁর। শরীর মন কোনওটাই ভাল নেই। তাই আবারও তিনি আদালতে এসে সংবাদমাধ্যমের সামনে কাঁদলেন। না ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাঁদেননি, তবে কান্নার মতো করেই কাতর কন্ঠে জানিয়েছেন তিনি, ‘এক বছর বিনা বিচারে আছি। আমায় জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। বন্দিমুক্তি কমিটি কোথায়? বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসা করবেন। তাঁরা মুখ খুলছেন না কেন?’ তিনি শ্রীমান পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee)। বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী। এদিন অর্থাৎ সোমবার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার(Presidency Correctional Home) থেকে তাঁকে হাজির করানো হয়েছিল আলিপুর আদালতে(Alipur Court)। সেখানেই তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর মনের দুঃখের কথা তুলে ধরেন। তবে তাঁর সেই দুঃখের কথার উত্তরও দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র(Sujat Bhadra)।
আরও পড়ুন ‘সব মামলার শুনানি স্থগিত করে দিতে বাধ্য হব’, ধমক প্রধান বিচারপতির
এদিন পার্থ জানিয়েছেন, ‘যাঁরা বন্দিমুক্তি আন্দোলন করেন, তাঁদের আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি। তাঁরা কোথায়? বিচার হচ্ছে না। বিনা বিচারে আমাকে আটকে রাখা হচ্ছে। আমি এটুকু বুঝেছি যে, শুধুমাত্র আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। কে কী বলল কিছু এসে গেল না। এটুকু বুঝেছি আমাকে জোর করে বিনা বিচারে এখানে আটকে রাখা হয়েছে। সুজাত ভদ্রকে জিজ্ঞাসা করবেন যাঁরা বন্দিমুক্তি নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা কোথায়? এখন বন্দিমুক্তি কমিটি কোথায়?’ পার্থ’র এই আক্ষেপেরই এদিন জবাব দিয়েছেন সুজাত ভডঃ তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘উনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে বন্দি নন। বন্দিমুক্তি কমিটির এ বিষয়ে কিছুই করার নেই। বন্দিমুক্ত কমিটি সাধারণ রাজনৈতিক বন্দিদের নিয়ে কাজ করে থাকে। তাঁরা জেলে বন্দি থাকাকালীন ঠিকমতো সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন কিনা, তা দেখে ওই কমিটি। আর পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজনৈতিক বন্দি নন। সেক্ষেত্রে তাঁর ভরসা একমাত্র আইন। আদালত যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা হবে। তাই বন্দিমুক্তি কমিটির দিকে আঙুল তোলার কোনও কারণ নেই।’
আরও পড়ুন রাজ্যে আরও ১০ দিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নির্দেশ হাইকোর্টের
সুজাত ভদ্রের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিৎ শূরও। তিনি জানিয়েছেন, ‘পার্থবাবুর বিচার হোক। নিরপরাধ হলে মুক্তি হোক। তবে তিনি এক জন নিপীড়ক, তাঁর পাশে থাকতে পারছি না আমরা। তাঁর বিরুদ্ধে জনগণের টাকা তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারছি না। ফলে এই ধরনের মানুষের পাশে থাকতে পারি না আমরা।’ অগ্যতা পার্থ এখন একা। তাঁর পাশে এখন না আছে দল, না আছে অপা। না আছে সুজাত ভদ্র না আছে কোনও সংগঠন। একাকী পার্থ’র দিন কাটছে প্রেসিডেন্সির অন্দরে।