নিজস্ব প্রতিনিধি: বিকিনি পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি পোস্ট করার জেরে চাকরি খোয়াতে হয়েছিল কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকাকে। সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই অধ্যাপিকাকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর। এবার সেই বিকিনি বিতর্ক নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন ওই অভিযোগকারিণী অধ্যাপিকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর তাঁকে ডেকে যৌনগন্ধী মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি তাঁর।
বিকিনি বিতর্কের জেরে চাকরি হারানো ওই অধ্যাপিকার আইনজীবী ঝুমা সেন জানান, ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর সকাল ১১ টায় তাঁর মক্কেলকে ফোন করেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. জে ফেলিক্স রাজ। তাঁকে ওইদিন বিকেল ৪টের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আসতে বলা হয়। ওই কনফারেন্স রুমে হাজির ছিলেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আশিস মিত্র, অধ্যাপক মেধা ভদ্র চৌধুরী, ডা. রেশমি নস্কর, ডা. সোমা সুর, সোশ্যাল ওয়ার্ক বিভাগের সেরিল ফ্রান্সিস, সেন্ট জেভিয়ার্স ল স্কুলের অধ্যাপক প্রত্যুষা দাস। সেখানে অধ্যাপিকাকে উদ্দেশ্য করে যৌনগন্ধী মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ। অধ্যাপিকার আইনজীবী ঝুমা সেন বলেন, ‘টানা দু’ঘণ্টা খাপ পঞ্চায়েত বসিয়ে একপেশে ভাবে আমার মক্কেলকে বিদ্রুপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি যৌনগন্ধী মন্তব্যও।’
উল্লেখ্য সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অধ্যাপিকাকে চাকরি থেকে সরে যেতে বাধ্য করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. জে ফেলিক্স রাজকে নোটিস পাঠানো হয় চলতি বছরের ১ মার্চ। ওই নোটিস পাঠানোর সাত মাস আগে ২০২১ সালের ৯ আগস্ট সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন বছর তিরিশের ওই তরুণী। তিনি পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। সেই নোটিসের উত্তরে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে ৯৯ কোটি টাকার মানহানি মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত এক পড়ুয়া ওই অধ্যাপিকার বিকিনি পরা ছবি দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেই ছবি ওই পড়ুয়ার বাবা দেখার পর বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই পড়ুয়ার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তলব করা হয় অধ্যাপিকাকে। কেন তিনি বিকিনি পরে সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করেছেন তা নিয়ে তাঁকে জবাবদিহি করতে হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই অধ্যাপিকা দাবি করেন, সেন্ট জেভিয়ার্স ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার আগে ওই ছবিগুলি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইন্সটাগ্রামের স্টোরিতে দিয়েছিলেন। যা মাত্র ২৪ ঘণ্টার জন্য দেখা যায়। একইসঙ্গে তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ‘প্রাইভেট’ করা রয়েছে যা যে কেউ চাইলেই তাঁর ছবি দেখতে পারেন না বলে দাবি করেন ওই অধ্যপিকা। কিন্তু সেসব কথায় কোনও কর্ণপাত না করে তাঁকে ‘চাকরি’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।