নিজস্ব প্রতিনিধি: সিঙ্গুর(Singur), বাংলা তো বটেই দেশের অন্যতম জমি আন্দোলনের পীঠস্থান। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনই বাংলার(Bengal) বুকে ৩৪ বছরের বাম অপশাসনের অবসান যেমন ঘটিয়েছিল, তেমনি বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের বিরোধী দলনেত্রীর আসন থেকে একদম মহাকরণের মসনদে পৌঁছে দিয়েছিল। সেই সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন যে ভুল ছিল না, সেটা প্রমাণিত হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টের(Supreme Court) ঐতিহাসিক রায়ে। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল, জমি অধিগ্রহণটাই বেআইনি ছিল। টাটারা(TATA Motors) অবশ্য সেই রায় প্রদানের অনেক আগেই সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যায়। তবে তাঁরা একটি মামলাও দায়ের করে পরবর্তীকালে আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালে। সেখানে রায় দেওয়া হয় টাটা গোষ্ঠীর স্বপক্ষে। সেই রায়ে বলা হয়েছিল, বাংলার সরকারকে সিঙ্গুরের বুকে টাটাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে শিল্পস্থাপনের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিতে হবে টাটা মোটরস গোষ্ঠীকে। সেই সঙ্গে মামলার খরচ বাবদ দিতে হবে আরও ১ কোটি টাকা। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। এবার সেই মামলা থেকেই সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি রবি কিষেন কাপুর।
আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ আসার পরে তা টাটা গোষ্ঠী এক বিবৃতি দিয়ে মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জকে জানিয়েছিল। কিন্তু আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের তরফে মামলা দায়ের করে রাজ্য শিল্প নিগম। কিন্তু প্রথম থেকেই এই মামলা শুনতে আপত্তি জানান একের পর এক বিচারপতি। এর আগে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ব্যক্তিগত কারণে এই মামলা থেকে সরে গিয়েছিলেন। এবার সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি রবি কিষেন কাপুরও। এখন দেখার মামলাটি আগামী দিনে কার এজলাসে ওঠে। রাজ্যের আইনজীবীদের একাংশের দাবি, সিঙ্গুরের জন্য টাটারা আদৌ কোনও ক্ষতিপূরণ পাবে কিনা তা খুব শীঘ্র মীমাংসিত হবে না। কেননা, সুপ্রিম কোর্ট আগেই যেহেতি জানিয়ে দিয়েছে জমি অধিগ্রহণটাই বেআইনি ছিল, তাই শেষ পর্যন্ত এই মামলা কলকাতা হাইকোর্ট ঘুরে সুপ্রিম কোর্ট অবধি যাবে। সেখানেই এই মামলার নিষ্পত্তি হবে। আর তখন সুপ্রিম কোর্টের পূর্বেকার রায় মান্যতা পাবেই। আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের রায় যাই হোক না কেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় টাটাদের পক্ষে নাও যেতে পারে। একের পর এক বিচারপতি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালে সমস্যার সমাধান হবে না। কাউকে না কাউকে তো মামলাতা শুনতেই হবে।