নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) আগে টানা ২ মাসের এক কর্মসূচী শুরু করছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। সেই কর্মসূচীর মধ্যমণি দলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। এই কর্মসূচীর কথা বুধবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকের ঘোষণা করেছিলেন দলনেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তারপর থেকেই বাম-বিজেপি-কংগ্রেস এক সুরে দাবি করছিল যে এই কর্মসূচী নাকি রাহুল গান্ধির(Rahul Gandhi) ‘ভারত জোড়া যাত্রা’(Bharat Joro Yatra)র নকল। কিন্তু এদিন অভিষেক যে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন সেখানে তিনি এই কর্মসূচীকে যেভাবে ব্যাখা করেছেন তাতে কার্যত ধোপে টিকছে না যে এই কর্মসূচী ‘ভারত জোড়া যাত্রা’র নকল। বরঞ্চ এই কর্মসূচী অনেক অনেক বেশি আমজনতার প্রতিনিধিকে তুলে আনার কর্মসূচী।
আরও পড়ুন ‘শাহকে মমতার ফোন’, প্রমাণ পেশে ব্যর্থ হয়ে ‘ছেঁদো’ যুক্তি শুভেন্দুর
সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন সভা থেকে অভিষেক জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী তাঁরাই হবে যাঁদের মানুষ বেছে নেবেন। এবার সেই লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি ও তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে অভিষেক বলেন, আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে রাজ্যে জনসংযোগ যাত্রা করতে চলেছেন তিনি। এই প্রচারের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, নির্বাচনের পাশাপাশি মানুষের মতামত নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরের প্রার্থী ঠিক করা হবে। ৬০ হাজার গ্রামীণ বুথে কে প্রার্থী হবে, সেই প্রসঙ্গে সরাসরি মানুষের মতামত নেওয়া হবে। রাহুল গান্ধির ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ র সঙ্গে এর তাই কোনও মিল নেই। সেই যাত্রা কেন করা হয়েছিল আর কোন লক্ষ্য নিয়ে করা হয়েছিল সে একমাত্র রাহুল জানেন আর কংগ্রেস জানে। কার্যত সেই যাত্রা ছিল লক্ষ্যহীণ এক যাত্রা। তৃণমূলের কর্মসূচী কিন্তু লক্ষ্যহীণ নয়। রাজ্যের ৬০ হাজার গ্রামীণ বুথে কারা কারা প্রার্থী হবেন সেটা ঠিক করতে এই কর্মসূচী। এদিন অভিষেক জানিয়েছেন, আগে প্রার্থী ঠিক হতো চার দেওয়ালের অন্দরে। জেলা থেকে যেমন সুপারিশ আসতো তার ভিত্তিতে প্রার্থী ঠিক হতো। সেই পদ্ধতিতে বদল ঘটাতে চাইছেন তিনি। গুরুত্ব দিতে চাইছেন আমজনতার মতামতকে।
আরও পড়ুন বাংলায় বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ ২০২৪’র ডিসেম্বরের মধ্যেই
এদিন অভিষেক জানিয়েছেন, ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচী দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথমত, জনসংযোগ যাত্রা, দ্বিতীয়ত, গ্রামবাংলার মতামত। জনসংযোগ যাত্রার আওতায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে সভা করবেন তিনি। গ্রাম বাংলার মতামতে, জেলা থেকে বুথ সভাপতি এবং এলাকার বিশিষ্ট মানুষজনকে ডাকা হবে। একটি ক্যাম্পে গোপন ব্যালটে পঞ্চায়েতে প্রার্থী নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হবে। সেখানে ভোটদান করা যেতে পারে প্রার্থী প্রসঙ্গে। এক্ষেত্রে নাম বা পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন থাকবে। যদি কেউ ভোটদান করতে না পারেন সেক্ষেত্রে অনলাইনেও প্রার্থী প্রসঙ্গে মতামত জানানো যাবে। www..tnj Official.com-এ অনলাইনেই প্রার্থী প্রসঙ্গে মতামত জানানো যাবে। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত এই যাত্রা হবে দুই মাস জুড়ে। আগামী ২৫ তারিখ থেকে দুই মাস পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে। আর এই দুই মাস পথেই থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাবেন তিনি। গ্রামে গ্রামে মানুষের সমস্যার কথা শুনবেন তিনি। প্রয়োজনে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উপায়ও বাতলাবেন তিনি। কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়া যাত্রা’য় এসবের কিছুই ছিল না। শুধু ছিল রাহুল গান্ধিকে দলের নেতা হিসাবে তুলে ধরার আপ্রাণ প্রচেষ্টা।