নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে(Bay of Bengal) জন্ম নেওয়া সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’(Ashani) শুক্রবার সকালে সামান্য নিম্নচাপ হিসাবে অবস্থান করছে অন্ধ্র উপকূলে। দিল্লির মৌসম ভবনের অনুমান এদিনই সে বিলীন হয়ে যাবে সাগরে। তাই তার আর কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব পড়বে না স্থলভাগে। তবে ‘অশনি’ দুর্বল হতেই সাগরের জোলো হাওয়া এখন হু হু করে ছুটে আসছে দুই বাংলার উপকূল পানে। আর তার জেরেই এ রাজ্যে আগামী ২-৩ দিন ভাল রকমের ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। কিন্তু সেই সঙ্গে বাড়বে তাপমাত্রাও। সোমবার থেকে পারা আরও চড়বে। আশঙ্কা থাকছে মে মাসের ২২-২৩ তারিখ থেকে আবারও এক দফা তাপপ্রবাহের(Heat Wave) মুখে পড়তে পারে রাজ্যের পশ্চিমের ৪-৫টি জেলা যার রেশ পড়বে দক্ষিণবঙ্গের(South Bengal) অনান্য জেলাগুলিতেও।
শুক্রবার সকালে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে, এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির(Rain) সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার দক্ষিণাংশে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাকি অংশে। হালকা বৃষ্টি হবে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, দুই বর্ধমান, পুরুলিয়া বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলায়। ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর ও উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ মহকুমায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। মাঝারি বৃষ্টি হবে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমা, দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমা এবং জলপাইগুড়ি জেলার সদর মহকুমায়। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে দার্জিলিং জেলার মিরিকি, কার্শিয়াং ও দার্জিলিং সদর মহকুমায়, কালিম্পং জেলায়, জলপাইগুড়ি জেলার মাল মহকুমায়, আলিপুরদুয়ার জেলায় এবং কোচবিহার জেলায়।
পাশাপাশি আবহাওয়া দফতর এটাও জানিয়েছে, সমুদ্রে আগামী ৪৮ ঘন্টা হাওয়ার গতিবেগ বেশি থাকবে। তাই ঢেউও শক্তিশালী ও স্বাভাবিকের থেকে বেশি উচ্চতার হবে। তাই আগামী ৪৮ ঘন্টা মৎস্যজীবীরা যেন সাগরে মাছ না ধরতে যান। সেই সঙ্গে রাজ্যের সৈকত এলাকায় পর্যটকদের সমুদ্র স্নানেও বিধিনিষেধ জারি রাখা হচ্ছে। এদিকে বৃষ্টির হাত ধরে দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের সাময়িক স্বস্তি মিললেও এদিন থেকেই চূড়ান্ত অস্বস্তিকর ঘর্মাক্ত আবহাওয়ার মুখে পড়তে হবে। কেননা দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে প্রচুর জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি রয়েছে। খাস কলকাতায় বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বাধিক ৯১ শতাংশ, যা চূড়ান্ত অস্বস্তিসূচকের ইঙ্গিত। শুক্রবার কলকাতায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। গতকাল কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। এদিন ভোরে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি।