নিজস্ব প্রতিনিধি: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের(General Elections 2024) দিনক্ষণ এখনও ঘোষিত হয়নি। কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি(BJP) অবশ্য তাঁদের প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে ১৯৫টি কেন্দ্রের জন্য। তারপরেই বাংলায় এসে ভোট প্রচার শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। করে ফেলেছেন ৩-৩টি সভা। আরামবাগ, কৃষ্ণনগর ও বারাসত। এর মধ্যে বারাসতের সভা থেকে বাংলায় নারীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়ে গিয়েছেন। বক্তব্যে ছুঁয়ে গিয়েছেন সন্দেশখালিও। ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ ৭ মার্চ আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের প্রাক্কালে সেই নারীদের নিরাপত্তা(Women Security in Bengal) নিয়ে মোদিকে পাল্টা জবাব দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। হাথরস থেকে মণিপুর নিয়ে বিঁধলেন বিজেপির কর্ণধার মোদিকে। এদিন মধ্য কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ছিল তৃণমূলের(TMC) মিছিল। সেই মিছিলেই পা মিলিয়েছিলেন মমতা। কার্যত জনস্রোতে ভেসে তিনি জনসংযোগ সারতে সারতে পৌঁছান সভামঞ্চে। সেখান থেকেই নিশানা বানান বিজেপিকে। জবাব দেন মোদিকেও।
এদিন মমতা শুরুই করেন সন্দেশখালি প্রসঙ্গ টেনে। বলেন, ‘সন্দেশখালি নিয়ে অনেকে ভুয়ো সন্দেশও দিয়েছেন। সন্দেশ মানে হিন্দিতে বলে সংবাদ। যেভাবে কয়েকটা ঘটনা নিয়ে…। হতেই পারে। হাতের পাঁচটা আঙুল তো সমান নয়। কিছু কিছু জায়গায় অনেক সময় আমাদের নলেজে থাকে না। যদি কোনও কিছু অন্যায় হয়েও থাকে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নলেজে এলে অ্যাকশন নিই। অন্যায় করলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই আমরা। তৃণমূলের কর্মীদের গ্রেফতার করতে কার্পণ্য বোধ করি না। কালকেও বিজেপি নেতারা বলে গেলেন এখানে মহিলারা নাকি সবথেকে বেশি নির্যাতিত হন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি এখানে মহিলারা সেফ এবং সেফেস্ট স্টেট। বিহারে বিচার হয় না, ইউপিতে বিচার হয় না, রাজস্থানে বিচার হয় না। মণিপুরে মহিলারা জ্বলছিল, নেকেড প্যারেড হচ্ছিল কোথায় ছিলেন বিজেপি নেতারা? আপনারা নারী সম্মানের কথা বলেন, সাক্ষী জলজ্যান্ত প্রমাণ। একজন বক্সার। বিহার, হাথরস ও মণিপুরের সময়ে কোথায় ছিল বিজেপি? বাংলাকে বদনাম করেন কেন? এখানে মহিলারা নাকি সবথেকে বেশি নির্যাতিত হন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি এখানে মহিলারা সেফ এবং সেফেস্ট স্টেট। বিহার, হাথরস ও মণিপুরের সময়ে কোথায় ছিল বিজেপি?’
এর পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘বাংলা জাগ্রত। কিছু হলে মহিলারা তেড়েফুঁড়ে বলেন। বাংলায় ৪৫৪ টিম পাঠিয়েছে। মণিপুরে এত বোন জ্বলে গেল কটা টিম পাঠিয়েছ বিজেপি? দেখলাম দিল্লিতে ২ হাজার কোটি টাকা বাজেটে রাখা হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করেছে ওরা। আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি, মডেলটা আমাদের। আমরা কোনও ভেদাভেদ করি না। প্রথমে করেছিলাম কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীরভাণ্ডারও দেখবেন বিশ্বভাণ্ডার হয়ে যাবে। আইসিডিএসে আগে ৯০ শতাংশ টাকা দিত। আমাদের ১০ শতাংশ দিতে হতো। এখন আমাদেরই সবটা দিতে হয়। বাংলার সৌজন্যতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। ভাবছেন, অত্যাচার করবেন আর তৃণমূলকে ঢ্যাঁড়স ভাববেন। মনে রাখবেন ঢ্যাঁড়স যেমন আছে কাঁচাকলাও আছে। উচ্ছে করলা সবই আছে। মিষ্টি চিরতাও আছে। কোনটা খাবেন ঠিক করে রাখুন। নয়নাকে বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই অনুষ্ঠানের ব্যবস্থার জন্য। সাগরিকা দিল্লি থেকে, সুস্মিতা এসেছে অসম থেকে। চারিদিকের মেয়েদের সঙ্গে সঙ্গে সন্দেশখালির মেয়েরাও এসেছেন সন্দেশ দিতে। অর্থাৎ মিষ্টি সংবাদ দিতে। আমি ধন্যবাদ জানাই। বাকি কথা গর্জনে হবে। আর গর্জন যখন হবে ধামসা মাদল শঙ্খ কাঁসর, উলুধ্বনি, আজানের ধ্বনি সব হবে।’