নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ”আউনি বাউনি কোথাও না যেও, তিনদিন ঘরে বসে পিঠে ভাত খেও’ গ্রাম বাংলার এ যেন চেনা রীতি। এপার বাংলার মানুষের কাছে এমন গানেই উদযাপিত হয় মকর সংক্রান্তি। আর ওপার বাংলার মানুষের মকর সংক্রান্তি উদযাপনে পাতে থাকে নানা মিষ্টির পদ। মুলো- চালতার টক অথবা সংক্রান্তির গারুর ডাল এই সবে মিলে মিশেই কাটে বাঙালির পৌষের শেষ। ঠিক একইভাবে ভারত উপমহাদেশেও মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। কিছুমাস শীতের পর যখন ফসল কাটার মরসুম আসে তারই জানান দেয় এই উৎসব। এদিন সূর্য দেবতার পুজো করা হয়। শুধু তাই নয় এই দিনটি দেশের প্রতি জায়গাতেই পালন করা হয় আলাদা আলাদা নামে।
লোহরিঃ লোহরি মূলত পঞ্জাবের উৎসব। এই দিনে এক একটি অঞ্চলের মানুষে তাঁদের আত্মীয় ও পরিজনদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানটি উদযাপন করেন। ভাংড়া, গিদ্দা নাচে, মিষ্টিমুখে চলে দেবী লোহরির আরাধনা। ফসল কাটা ও নতুন ফসল রোপণের উৎসব হিসাবে উদযাপিত হয়। মিষ্টিমুখে থাকে তিল, গজক, গুড়। চলে বনফায়ার। খাবারে এদিন পরিবেশন করা হয় ‘সর্ষো দা শাগ’ আর ‘মাক্কি দি রোটি’ যা পঞ্জাবের এক অন্যতম খাবার। কৃষকদের নতুন বছর হিসাবে বিবেচনা করে এই দিনটি উদযাপিত হয় ঠিক মকর সংক্রান্তির আগে।
পোঙ্গালঃ তামিলনাড়ুর সবথেকে বড় উৎসব ‘পোঙ্গাল’। তামিলনাড়ুতে মকর সংক্রান্তিকে পোঙ্গাল বলা হয়। তিনদিন ব্যাপী হওয়া এই উৎসব তামিলনাড়ুর ঐতিহ্য ও পরম্পরার ধারকবাহক। পোঙ্গাল শব্দের অর্থ ‘বিপ্লব’। প্রতি বছর ১৪ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসবের আয়োজন করা হয় তামিলনাড়ুতে। তিনদিন ধরে চলা পোঙ্গালের বেশ কয়েকটি ভাগ আছে যেমন- বোঘি, সূর্য পোঙ্গল, মাত্তু পোঙ্গল ও কানুম পোঙ্গল। এই চার রীতির আলাদা আলাদা চার নিয়ম রয়েছে।
বিহুঃ অসমে মাঘ বিহুর গুরুত্ব উল্লেখ্য। পৌষের শেষে এই উৎসব চলে প্রায় দুদিন ধরে ফসল কাটার শেষ, তা বোঝাতেই এই উৎসব। অগ্নি ঈশ্বরকে এই উৎসবের প্রথম দিনটি উৎসর্গ করা হয়। বহু সম্প্রদায় ও উপজাতির মানুষ এই উৎসবে সামিল হন।