নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজকালকার ঘরবন্দী ওয়ার্ক ফ্রম হোমের যুগে ওজন বৃদ্ধির সমস্যায় আমরা কমবেশি সকলেই ভুগছি। করোনার কোপে এখন আমাদের অধিকাংশেরই অফিস বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। এর ফলে হিতে হয়েছে বিপরীত। বাড়িকে অফিস বানিয়ে ফেলায় একদিকে যেমন কাজের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে, অন্যদিকে তেমনই আমরা হয়েছি আরও অলস এবং ঘরকুনো। ফলে সব মিলিয়ে ওজন বেড়েছে হুরমুরিয়ে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, অস্বাভাবিক হারে ওজন বাড়লে কখনই সেটা অবহেলা করা উচিত না। কারণ ওজন বৃদ্ধি পেলেই আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে নানা রোগ। মূলত সেইসব রোগের কারণেই ওজন অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। আসুন জেনে নিই মূলত কোন কোন রোগের জন্য আমাদের ওজন সাধারণত বেড়ে থাকে।
ইনসমনিয়া:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘুমের অভাবে ওজন বাড়াতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া একদিকে যেমন আমাদের মন মেজাজে প্রভাব ফেলে তেমনই আমাদের হরমোনের পরিবর্তন ঘটায় অনিদ্রা। এছাড়া রাত জাগলে আমাদের বেশী খিদে পায় এবং সেই সময় আমরা মূলত অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকই, যা ওজন বাড়ানোর অন্যতম কারণ।
মেনোপজ:
মধ্যবয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে মেনোপজের সময় হঠাৎ করে ওজন বেড়ে যায়। এর কারণ হল ইস্ট্রোজেনের মাত্রা। মেনোপজ আমাদের ইস্ট্রোজেনের স্তরে পরিবর্তন আনে, যে কারণে আমাদের শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যায় এবং তার জেরে অস্বাভাবিক হারে ওজন বৃদ্ধি পায়।
কিডনির সমস্যা:
কিডনির সমস্যা থাকলে ওজন বাড়তে পারে। কিডনি ব্যর্থতা তথা নেফ্রোটিক সিনড্রোম বা এই জাতীয় কিছু সমস্যা যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে সেগুলোর কারণে আমাদের ওজন বাড়তে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, যদি কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে শরীরে জল জমে এবং তার ফলেও আমাদের ওজন বৃদ্ধি পায়।
থাইরয়েড সমস্যা:
যদি আপনার থাইরয়েডের সমস্যা থাকে এবং আপনার শরীর পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে অক্ষম হয় তাহলেও আপনার ওজন বেড়ে যায়।
পলিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অনেক নারীর ওজন বেড়ে যায় এবং তা ঝরাতে কষ্ট হয়। আর এ কারণে নারীদের গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হয়। এ সমস্যা এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মানসিক চাপ:
মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, মেজাজ, বিষণ্ণতাও ওজন বাড়াতে পারে। যদিও অনেকের এই কারণে ওজন বাড়ে। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেকে এই সমস্যায় খাবারের দিকে ঝোঁকে এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার খেয়ে থাকে। বেশিরভাগ মানুষ এই সময়ে ব্যায়াম করতেও পছন্দ করেন না। এর ফলে বাড়তে থাকে ওজন।
মূলত এই সমস্ত কারণের জন্যই বিশেষজ্ঞরা ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলে থাকেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের উপদেশ দিয়ে থাকেন।