নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা: বয়স মাত্র ৩৯। দেখতেও আহামরি সুন্দরী নন। তবুও ছলাকলায় ভুলিয়েছেন একের পর এক পুরুষকে। তার পরে তাদের বিয়ে করে সর্বস্ব লুঠ করে নিজের ব্যাঙ্ক ব্যালান্স বাড়িয়ে চলেছিলেন খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা সুলতানা পারভীন নীলা (Sultana Parveen Nila)। ডাক নাম বৃষ্টি। শেষ রক্ষা হয়নি। আজ সোমবার কুখ্যাত ঠগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নীলার বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত।
খুলনার (Khulna) সোনাডাঙ্গার বাসিন্দা সুলতানুল আলম বাদলের মেয়ে নীলার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বিয়ের (Marruiage) নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছিল। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অন্তত আট জনকে বিয়ে করেছিলেন বলে অভিযোগ। সপ্তম স্বামী এম রহমান (M Rahaman) নীলার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে নীলা সহ চাসর জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিআইডি।
তদন্তে সিআইডির গোয়েন্দারা জানতে পারেন, শারীরিক গঠন ও রূপ-যৌবনকে পুঁজি করে প্রতারণা চালাচ্ছিলেন নীলা। মূলত ধনাঢ্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, চাকরিজীবীদের ফাঁদে ফেলতেন। তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন। তার পরে আসল রূপ প্রকাশ করতেন। বিয়ের পর স্বামীর সম্পদ নিজের নামে করে নেওয়ার পাশাপাশি নগদ অর্থ, জমি, গাড়িও হাতিয়ে নিতেন। ১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিয়ে হয় নীলার। প্রথম স্বামীর নাম শাহাবউদ্দিন সিকদার। তিনি ছিলেন জাপান প্রবাসী। বিয়ের কিছুদিন বাদে নগদ অর্থ ও সোনার গয়না হাতিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন। ২০০৫ সালের ৬ মে খুলনা মহানগরীর শেরেবাংলা রোডস্থ এসএম মুনির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় নীলার। দ্বিতীয় স্বামীর কাছে নিজেকে ‘কুমারী’ জাহির করে বিয়ে বসেন তিনি। কিছুদিন বাদেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। দুবছর বাদে খালিশপুর ওয়ারলেস ক্রস রোডের বাসিন্দা ঠিকাদার মইনুল আরেফিন বনিকে বিয়ে করেন নীলা। ২০০৮ সালের এপ্রিল হওয়া এ বিয়েতে শর্ত ছিল নীলা তার স্বামীকে অপর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ইতালি নিয়ে যাবেন। এতে তাকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের টাকা। সেই টাকা পাওয়ার পরেই গা ঢাকা দেয় নীলা। প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন বনি। সেই মামলা চলাকালীন ২০১১ সালে ইফতিখার নামে নারায়ণগঞ্জের এক বাসিন্দাকে। এই ভাবেই বিয়ের নামে দিনের পর দিন প্রতারণা চালিয়ে গিয়েছেন নীলা।