নিজস্ব প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ: লাগাতার সমালোচনা ও নিন্দার মুখে শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। হবিগঞ্জের বানিয়াংচয়ে বিশ্বখ্যাত ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের পৈতৃক বসতভিটে থেকে জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করে করেছে। সেই সঙ্গে বসতভিটে পুনরুদ্ধার করার সঙ্গে সঙ্গে জমিতে ‘রামনাথ বিশ্বাস স্মৃতি পাঠাগার’ নামে সাইনবোর্ড সাঁটিয়েও দিয়েছে। তবে কবে থেকে ওই পাঠাগার ভবন নির্মাণ শুরু হবে, তা নিয়ে কিছু বলতে রাজি হননি স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা।
১৮৯৪ সালের ১৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষণপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন রামনাথ বিশ্বাস । ছোটবেলা থেকেই ঘোরার উপরে বিশেষ আগ্রহ ছিল তাঁর। বড় হয়ে সাইকেল নিয়ে বেশ কয়েকবার বিশ্বভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণ নিয়ে তাঁর লেখা তিরিশটি বই রয়েছে। যা পাঠকদের কাছে যথেষ্টই জনপ্রিয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় কলকাতায় পাড়ি জমান রামনাথ। ১৯৫৫ সালে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর তাঁর মৃত্যুর পরে বানিয়াংচয়ের বাড়িটি দখল করে নেন ওয়াহেদ মিয়া নামে এক মুসলিম লিগ নেতা। পরে অবশ্য ভোলবদলে তিনি শাসকদল আওয়ামী লীগে নাম লেখান। গত কয়েক বছর ধরে রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি দখল করে জাঁকিয়ে বসেছেন।
ওই অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে খবর করতে গিয়ে ওয়াহেদের পোষ্য গুণ্ডা বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক সাংবাদিক। বিশ্বখ্যাত পর্যটকের বাড়ি দখলমুক্ত করে সেখানে পাঠাগার নির্মাণের দাবিতে সোচ্চার হন দেশের শতাধিক বুদ্ধিজীবী। এর পরেই হুঁশ ফেরে জেলা প্রশাসনের। শেষ পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত পর্যটকের বাড়ি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। আর রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটে পুনরুদ্ধারের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ‘রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটি’র সদস্যরা।