এই মুহূর্তে




সোনার দুর্গা এলেন নাটমন্দিরে, জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে নারীর হাতে হল মহামায়ার চক্ষুদান

নিজস্ব প্রতিনিধি: জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির অন্দরমহল থেকে নাট মন্দিরে এলেন সোনার দুর্গা। এই পরিবারের স্বর্ণ নির্মিত মহামায়া ভুবন বিখ্যাত। চলতি বছর জলপাইগুঁড়ি রাজপরিবারের পুজো ৫১৬ তম বর্ষে পা দিল।  নাটমন্দিরে আসার পর ওই মূর্তি গেল পার্শ্ববর্তী বৈকুন্ঠনাথের মন্দিরে। নিরাপত্তার বলয়ের মধ্যেই সম্পন্ন হল সোনার দুর্গার চক্ষুদান পর্ব। তারপর নাট মন্দিরে চক্ষুদান হয়ে মৃন্ময়ী মূর্তি হয়ে ওঠেন চিন্ময়ী মা। মহালয়ার সকালে তর্পণ সেরে মন্দিরে বসেই মায়ের চক্ষুদান করলেন রাজবাড়ীর প্রবীণ সদস্য প্রণতকুমার বসু এবং তার পুত্রবধূ লিন্ডা বসু।

জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে এখন উৎসবের মেজাজ। এখানে প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় ঘট পুজো। চক্ষুদানের পর মৃন্ময়ী মা যখন চিন্ময়ী হন তখন তাঁকে বস্ত্র পরানো হয়। প্রথমে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে মা দুর্গাকে শাড়ি দেওয়া শাড়ি পরানো হয়। তার ওপর পরানো হয় বেনারসি। জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির দেবী তপ্ত কাঞ্চনবর্ণ। এখানে এখনও প্রচলিত রয়েছে গুপ্তপুজো। এখানে মা দুর্গার বাহন হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বাঘ ও সিংহ। সঙ্গে থাকেন দেবী দুর্গার দুই সখী জয়া ও বিজয়া।

জলপাইগুড়ি রাজবাড়িতে দেবী দুর্গার আরাধনা হয় কালিকাপুরাণ মতে। দেবীর ভোগে থাকে জলপাইগুড়ির করলা নদীর বোয়াল, শোল, চিতল, ইলিশ, চিংড়ি । ৫ রকম মাছ দিয়ে পেট পুজো সেরে মা প্রস্তুত হন কৈলাশে যাওয়ার জন্য। দশমীতে খই দই নিবেদন করার পর মাকে খাওয়ানো হয় পান্তা ভাত, ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে রান্না করা কচুর শাক। বিজয়া দশমীতে দেবীর বিসর্জন হয় রাজবাড়ীর পুকুরে।

শোনা যায়, বহু বছর আগে নরবলি দিয়ে শুরু হয়েছিল জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির পুজো। খেলার ছলে মাটির দলা নিয়ে দুর্গা প্রতিমা বানিয়েছিল দুই ভাই বিশ্ব সিংহ ও শিষ্য সিংহ। এই পুজোতেই নাকি ছাগ শিশু কল্পনা করে বলে দেওয়া হয়েছিল এক বালককে। মনে হয় দেবী দুর্গার আশীর্বাদে পরবর্তী সময়ে বিশ্ব সিংহ কোচবিহারের রাজা হন। আর শিস্য সিংহ পান বৈকন্ঠপুরের রাজত্ব।  দুই ভাই রাজা হয়েও কিন্তু দুর্গাপুজো বন্ধ করেননি।

৫০০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। আজ আর রাজপাট নেই কিন্তু পুজোর আমেজ রয়েছে একই রকমের। সেই আগের মতোই ধুমধাম সহকারে পুজো হয়। রাজবাড়ির পুজোতে এখনও পর্যন্ত বলি দেওয়া হয় হাঁস, পায়রা, পাঠা, চালকুমড়ো ও আখ। জলপাইগুড়ি রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী চার দিনই বলি হয়। অষ্টমীর মাঝরাতে চার জোড়া পায়রা বলি হয়। সেই সময় মন্দিরের ভেতরে বাইরের লোকজনকে থাকতে দেওয়া হয় না। মন্দিরের চারদিক শুধু ঘিরে থাকেন রাজ পরিবারের সদস্য এবং পুরোহিতরা।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ভারতের নাগরিক, অথচ সপরিবারে বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেলেন বাংলাদেশ, চাঞ্চল্য সংগ্রামপুরে

মালদার বৈষ্ণবনগর থেকে ২ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী গ্রেফতার

দেশীয় আনারকলিতে ‘মিস ইউনিভার্স’ মঞ্চের শোভা বাড়ালেন ভারতীয় প্রতিযোগী মণিকা বিশ্বকর্মা

পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

এগরায় জমি বিবাদ ঘিরে সংঘর্ষ, দু’পক্ষের বাড়িতে আগুন

মানতে পারেননি ছেলের মৃত্যুশোক, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী মা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ