নিজস্ব প্রতিনিধি, বেঙ্গালুরু: এ কাহিনি এক উমেশের, যিনি তাঁর অজান্তেই হয়ে উঠেছিলেন উমা। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উমেশ জানিয়েছেন, কীভাবে তিনি উমা হয়ে উঠলেন। উমেশের বাড়ি বেঙ্গালুরুর রামনগর জেলায়। কৃষক পরিবারের সন্তান। সুপারি ও নারকেলের চাষ করে পরিবারের আয়। শোনা যাক উমেশের মুখে উমা হয়ে ওঠার গল্প, তার নিজের মুখে।
‘ছোট বয়সে আমি মেয়েদের সঙ্গে খেলতে ভালোবাসতাম। ওদের সঙ্গে গল্প করতেও ভালো লাগত। একসঙ্গে পুকুরে জল আনতে যেতাম। ঘরের উঠোনে রোজ বিকেলে ওদের সঙ্গে গল্প আড্ডায় মেতে উঠতাম।
বাড়িতে রান্নার কাজে মাসিকে সাহায্য করতাম। মেজে দিতাম বাসন-পত্র। মাসি খুশি হয়ে আমায় যত্ন করে আঁচড়ে দিতেন। আর স্বাধীনতা দিবস এগিয়ে এলে আমার মন খুশিতে ভরে উঠত। কিন্তু শাড়ি পরতে ভীষণ ভালোবাসতাম। শাড়ি পরার লোভ সামলাতে পারতাম না। মায়ের আলমারি থেকে শাড়ি নামিয়ে পড়তাম। স্কুলের মাস্টারমশাইরা আমাকে দেখলে খুশি হতেন। স্বাধীনতা দিবসে হাতে দিতেন জাতীয় পতাকা। স্কুল থেকে ওই দিন একটি শোভাযাত্রা বের হত। শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দিতাম আমি।
তখন ক্লাস ফোরে পড়ি। নিজের মধ্যে একটা অদ্ভুত পরিবর্তন হচ্ছিল। আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আমার সমবয়সী এক যুবকের প্রতি ভীষণভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। ওকে মনে মনে ভালোবেসে ফেলি। আমার এই পরিবর্তন বাবার নজরে পড়ে গিয়েছিল। বাবা সেটা পছন্দ করত না। মনে আছে আমায় বেশ কয়েকবার মারধরও করেন।
ব্যাপারটা শুধু বাড়ির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বাড়ি থেকে সেটা গড়াল স্কুলে। তখন ক্লাস এইটে পড়ি। স্কুলে শৌচাগারের দরজা বন্ধ করে আমার যৌনাঙ্গ পরীক্ষা করা হয়। স্কুল থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরি। কাউকে তো বলব যন্ত্রণার কথা। মাকে বলতে পারব না। স্কুলের কোনও দিদিমনি বা স্যরকে বলতে পারব না। ঘরে চুপ করে হাপুস নয়নে কাঁদতাম। কর্মক্ষেত্রেও আমাকে নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। তবু সেই সব সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সময়ের হাত ধরে আমি উমা থেকে উমেশ হয়ে উঠলাম।