নিজস্ব প্রতিনিধি, হায়দরাবাদ: ‘অমৃতকালের’ ভারতের বাস্তব চিত্র ফের একবার ফুটে উঠল। প্রসব যন্ত্রণা ওঠার পরে ডাকা হয়েছিল সরকারি অ্যাম্বুলান্স। তেল ফুরনোয় শেষ পর্যন্ত সেই অ্যাম্বুলান্স এসে আর পৌঁছয়নি। ফলে মাঝ পথে রাস্তার পাশেই সন্তানের জন্ম দিলেন এক প্রসূতি। তবে পরে অন্য একটি সরকারি অ্যাম্বুলান্স এসে মা ও সদ্যোজাত নবজাতককে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে। লজ্জাজনক ঘটনাটি ঘটেছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের রাজ্য তেলেঙ্গানার নির্মল জেলায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি প্রসব যন্ত্রণা উঠেছিল তুলাসিপেট গ্রামের আদিবাসী মহিলা গঙ্গামানিমের। স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা উঠতেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলান্স পরিষেবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন গঙ্গার স্বামী। অ্যাম্বুলান্স চালক খানিকবাদে জানান, তেল ফুরিয়ে গিয়েছে। গুগল পে-তে তেল ভরার টাকা পাঠানো হলে জ্বালানি ভরে আসতে পারেন। অ্যাম্বুলান্সের কথা শুনে গুগল পে-তে ৫০০ টাকা পাঠিয়েও দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে প্রসব যন্ত্রণায় কাহিল হয়ে পড়েছেন গঙ্গা। কোনও ক্রমে গ্রামের বাসিন্দারা তাঁকে ধরাধরি করে গ্রামের মূল রাস্তার পাশে নিয়ে যান। অ্যাম্বুলান্স চালকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু আ্যাম্বুলান্স চালকের দেখা মেলেনি।
কিছুক্ষণের মধ্যে রাস্তার পাশেই সন্তান প্রসব করেন গঙ্গা। পরে অবশ্য আর একটি সরকারি আ্যাম্বুলান্স এসে হাজির হয়। ওই অ্যাম্বুলান্সে থাকা এক নার্স গঙ্গার নবজাতকের নাড়ি কেটে (অ্যাম্বিকাল কর্ড) দেন। মা ও সদ্যোজাতকে হাসটপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুজনেই বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন। নির্মলের জেলাশাসক বরুণ রেড্ডি জানিয়েছেন, দুর্গম হওয়ার কারণে জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের প্রসূতিদের সম্ভাব্য সন্তান প্রসবের কয়েকদিন আগেই হাসটপাতালে নিয়ে আসা হয়। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর গঙ্গামানিমের সন্তান প্রসব হওয়ার সম্ভাব্য তারিখ ছিল। কিন্তু এক মাস আগেই তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় এমন ঘটনা গটেছে। অ্যাম্বুলান্সের তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় গঙ্গামানিমকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করলেও মানতে চাননি নির্মলের জেলাশাসক।