নিজস্ব প্রতিনিধি: নেতাজির জন্মদিন পালন নিয়ে আগেই আরএসএসকে খোঁচা দিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসুর কন্যা অনিতা বসু পাফ। সোমবার বাবার ১২৬ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফের সঙ্ঘ পরিবারের উদ্দেশে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘নাৎসিবাদের সমর্থক তথা হিন্দুত্ববাদের অন্যতম প্রবক্তা বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে পছন্দ করতেন না বাবা। তাছাড়া ধর্মীয় ভেদাভেদেরও তীব্র বিরোধী ছিলেন।’
এদিনই কলকাতার শহিদ মিনারে ‘নেতাজি লহ প্রণাম’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত দাবি করেছিলেন, ‘নেতাজির লক্ষ্যপূরণেই এগিয়ে চলছে সঙ্ঘ। নেতাজি যে শক্তিশালী ভারত দেখতে চেয়েছিলেন, সেই শক্তিশালী ভারত গঠনই সঙ্ঘের লক্ষ্য।’ সরসঙ্ঘচালকের ওই দাবির কয়েক ঘন্টার মধ্যে ফের আরএসএস ও বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন সুভাষ কন্যা অনিতা বসু পাফ। নেতাজির ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে এদিন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ভার্চুয়ালি ওই আলোচনাসভায় অংশ নেন অনিতা বসু পাফ। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘নেতাজি অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী ছিলেন। নারী-পুরুষ, ধর্মে কোনও বিভেদ পছন্দ করতেন না। তাই বিনায়ক সাভারকারকে ভীষণ অপছন্দ করতেন। আজাদ হিন্দ ফৌজে কোনও ধর্মীয় বিভাগ ছিল না। নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলতেন। তাই আজাদ হিন্দ ফৌজে প্রথম মহিলা সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন। নেতাজি ধর্মের বিভাজন সরিয়ে রেখে উন্নয়নের কথা বলেছেন। শিল্পায়নের কথা বলেছেন। দেশের অগ্রগতির কথা বলেছেন। সেখানে ধর্মীয় ভেদাভেদের কোন জায়গা ছিল না।’
প্রায় ৭৮ বছর হতে চলল নেতাজির মৃত্যু-অন্তর্ধান রহস্যের উপরে পর্দা পড়েনি। তিন-তিনটি কমিশনও এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। নেতাজি ভক্তদের একাংশ আজও বিশ্বাস করেন না ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট তাইপের তাইকুতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল। যদিও অনিতা বসু এদিন ফের জানিয়ে দেন, ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনাতে নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল।’ নেতাজির মৃত্যু-অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে সবাইকে তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন সুভাষ কন্যা।