নিজস্ব প্রতিনিধি: একসময় তাঁরা ছিলেন দম্পতি। কিন্তু এখন দুইজনই দুই পৃথক পৃথক পথে হাঁটা দিয়েছেন।তবে রাজনীতিকে বিদায় দেননি তাঁরা। দুইজনে রয়েছেন দুই বিরোধী শিবিরে। একজন বিজেপিতে, অন্যজন তৃণমূলে। কিন্তু তাঁদের ঘিরে আগ্রহ এখনও তুঙ্গে রয়ে গিয়েছে। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এই দুইজনকে ঘিরে আগ্রহ ছিল। কেননা দুইজনের একজন এবারে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থী হয়েছেন। অন্যজনের কাঁধে ছিল গুরু দায়িত্ব, জেলা পরিষদ দখলের। কিন্তু ভোট সূত্র বলছে, যিনি সরাসরি প্রার্থী হয়েছেন, তিনি এবার জিততে পারেন। কিন্তু যার কাঁধে জেলা পরিষদ দখলের দায়িত্ব ছিল তিনি নিজের এলাকার মাটিই ধরে রাখতে পারেননি। নজরে বাঁকুড়া(Bankura) জেলার বিষ্ণুপুর(Bishnupur) লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি(BJP) সাংসদ সৌমিত্র খান(Soumitra Khan) এবং তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল(Sujata Mondol)।
আরও পড়ুন বিরোধীদের অশান্তি অব্যাহত জেলায় জেলায়
সুজাতা এবার বাঁকুড়া জেলারই জয়পুর ব্লকের ৩টি জেলা পরিষদের আসনের মধ্যে ১টি আসনে তৃণমূলের(TMC) প্রার্থী হয়েছেন। সে এলাকায় সুজাতা প্রার্থী হয়েছেন সেই এলাকাটি আবার সৌমিত্রের সংসদীয় কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। অর্থাৎ এবারের নির্বাচন ছিল সৌমিত্র আর সুজাতা দুইজনের কাছেই মর্যাদার লড়াই। সুজাতা একুশের ভোটেও লড়াই করেছেন। তৃণমূল তাঁকে হুগলি জেলার আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছিল। কিন্তু ৭ হাজারের সামান্য কিছু বেশি ভোটে তিনি হেরে যান। এবার দল তাঁকে জয়পুরের জেলা পরিষদ আসন থেকে প্রার্থী করেছে। উনিশের লোকসভা ভোটে সুজাতা ছিলেন সৌমিত্রের পাশে। আদালতের নির্দেশে সেই সময় সৌমিত্র তাঁর সংসদীয় কেন্দ্রে ঢুকতেই পারছিলেন না। প্রচারও করতে পারছিলেন না। সেই সময় হাল ধরেছিলেন সুজাতা। সৌমিত্রের হয়ে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র চষে বেড়িয়েছিলেন। জিতেও ছিলেন সৌমিত্রকে। সুজাতার সেই লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়েছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদিও। কিন্তু কুর্ণিশ জানাননি সৌমিত্র। য়াজ তাঁকে সুজাতাকে ছাড়াই থাকতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন বর্জ্য পৃথকীকরণ জরুরি, কাউন্সিলরদের প্রচারে নামাচ্ছে KMC
উনিশের ভোটে বাঁকুড়া জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রই গিয়েছিল বিজেপির দখলে। একুশের ভোটে জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি জয়ী হয়েছিল ৮টি আসনে। তার মধ্যে ৫টিই ছিল সৌমিত্রের সংসদীয় কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বিধানসভা কেন্দ্র। এই ৫টি কেন্দ্র হল সোনামুখী, ইন্দাস, কোতুলপুর, বিষ্ণুপুর এবং ওন্দা। জেলার বেশির ভাগ বিধানসভা কেন্দ্র দলের দখলে আসায় এবার সৌমিত্রের ঘাড়ে দায়িত্ব বর্তেছিল বাঁকুড়া জেলা পরিষদ দখল করার। কিন্তু সূত্র বলছে সেই লক্ষ্যে সম্ভবত সফল হচ্ছেন না সৌমিত্র। বাঁকুড়া জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলেই থেকে যাচ্ছে। সুজাতাও জিতছেন। আর সৌমিত্রের সংসদীয় কেন্দ্রে ধাক্কা খেতে চলেছে বিজেপি যা ২০২৪’র লড়াইয়ে সৌমিত্রকে কঠিন পরিস্থিতির মুখে ফেলে দিতে চলেছে।