নিজস্ব প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন কিংবদন্তি ব্রাজিলিয়ন রাজা পেলে। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। পরপর তিনবার বিশ্বকাপ জেতা মহারথীর প্রয়াণে গোটা বিশ্ব স্তব্ধ। মৃত্যুকালে কিংবদন্তির বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমিদের কাঁদিয়ে চলে গেলেন মৃত্যুর পরপারে। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফুটবলার ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন আমজনতা-সেলিব্রিটি সবার। পেলের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর পরিবার। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ‘মাল্টিপল অর্গ্যান ফেইলিওর’ হয়ে মারা গিয়েছেন কিংবদন্তি। ১০০ বছর গন্ডি ছাড়িয়েছে পেলের বৃদ্ধা মা, শয্যাশায়ী। তবুও বেঁচে রয়েছেন তিনি। সারা বিশ্বের কাছে তাঁর মৃত্যু যতটা না গভীর, মা বেঁচে থাকতে মাকে ছেড়ে পুত্রের চলে যাওয়া আরও বেশি বিষাদে ভরিয়েছে পেলের পরিবারকে। খুব মাতৃভক্ত ছিলেন পেলে। সাধারণত কথায় আছে, ছেলে সন্তান মায়ের খুব আদুরে হয় এবং পিতার কাছে মেয়ে সন্তান খুবই আদুরে হয়।
ছেলের ফুটবলার হওয়ার সবথেকে বড় উৎসাহ ছিল পেলের মায়ের। বাল্যকালে বাবার থেকে ফুটবল প্রশিক্ষণ নিলেও মা-ই ছিল তাঁর সুখ-দুঃখের একমাত্র সাথী। এডসন নাসিমেন্তো সান্তোসে ডাক পাওয়ার পরও ক্যাম্প ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুধুমাত্র মায়ের কষ্ট, অভাবের সংসারের কথা ভেবে কান্না চেপে রেখে সান্তোসে থেকে গিয়েছিলেন পেলে। তাঁর মা ডোনা সেলেস্তে এখনও জীবিত। শেষ বয়সে এখন তাঁর পক্ষে সন্তানের মৃত্যু শোক সহ্য করা সত্যিই কষ্টকর। নিজ বাড়িতে ফুটবল ইতিহাস সৃষ্টিকারী সন্তানকে শেষবার দেখার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কিন্তু মায়ের ডাকে হাসপাতাল থেকে ফিরে এলেন না। মৃত্যুর কাছে হারতে হল তাঁকে।
পেলে সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। পেলের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার আগে তাঁকে ক্লাব সান্তোসে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সবাই তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর প্যারেড করে তাঁকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। কিংবদন্তির মা সবসময় তাঁর সন্তানকে আগলে রাখতেন। একবার ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৬৬ বিশ্বকাপের আগেই কাউকে কিছু না জানিয়ে তিনি চলে গিয়েছিলেন ছেলের ব্রাজিলের ট্রেনিং ক্যাম্পে। মাকে দেখা মাত্রই মাকে জড়িয়ে গিয়ে ধরেন তিনি। সেই মাই ছেলেকে ধরে রাখতে পারলেন না। মা ডোনাকে ফাঁকি চির নিদ্রায় চলে গেলে ফুটবল কিংবদন্তি।