এই মুহূর্তে




৫০০ বছর আগে জয়নগরের বুকে মোতিলাল পরিবারে পুজোর সূচনা

Courtesy - Google




নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) নানা শহরে বহু বনেদি পরিবারে দুর্গাপুজো হয় কয়েক শতাব্দী ধরে। সেই রকমই এক পরিবার হল রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার বারুইপুর মহকুমার জয়নগর-মজিলপুর(Joynagar Majilpur) পুরসভা এলাকার মোতিলাল পরিবার যারা প্রায় ৫০০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় দুর্গাপুজো(Motilal Family Durga Puja) করে আসছেন। চলতি প্রবাদ, জয়নগরের অধিষ্ঠাত্রী হলেন দেবী জয়চণ্ডী। এলাকায় জনশ্রুতি, দেবী জয়চণ্ডীর নামানুসারেই এলাকার নাম হয় জয়নগর। সেই জয়চণ্ডীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মোতিলাল বংশের পূর্বপুরুষ গুণানন্দ মোতিলাল, যার আদি নিবাস ছিল পূর্ববঙ্গের যশোরের বিক্রমপুরে। জয়নগরের জমিদার আক্ষরিক অর্থে ছিলেন গুনানন্দ মতিলাল। তিনি শুধু জয়চণ্ডীর মন্দির প্রতিষ্ঠাই করেছিলেন তাই নয়, সেখানে জনবসতিরও স্থাপন করেন। নিজেও সেখানে সপরিবারে বসবাস শুরু করেন বাড়ি বানিয়ে।

মোতিলাল পরিবারের সদস্যদের দাবি, একবার যশোরের বিক্রমপুর থেকে সপরিবারে সাগরসঙ্গমে যাত্রা শুরু করেছিলেন গুণানন্দ। সে প্রায় ৫০০ বছর আগেকার কথা। একদিন সন্ধ্যায় তাঁর বজরা নোঙর করে যখন রাত্রি যাপনের ব্যবস্থায় সবাই ব্যস্ত ছিল, তখন ক্লান্তি বশ্বত গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হন গুণানন্দ। ঘুমের মধ্যেই তিনি স্বপ্নে দেখেন, এক বালিকাকে। সেই বালিকা স্বপ্নাদেশ দিয়ে জানায়, তিনিই দেবী জয়চণ্ডী। তাঁকে প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন তিনি। দেবীর নির্দেশ মেনে ঘুম থেকে উঠে পরের দিন সকালে পাইক বরকন্দাজ নিয়ে গুণানন্দ ঢোকেন জঙ্গলে। তখন জয়নগর ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। ছিল বাঘও। সেখানেই জঙ্গলের মধ্যে একটি বকুল গাছের তলা থেকে দেবী জয়চণ্ডীর পাথরের খণ্ড খুঁজে পান গুণানন্দ। সেই পাথরের খণ্ড দেখে বকুলগাছের কাঠ দিয়ে দেবীর মূর্তি ও মন্দির প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেই গুণানন্দ। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই কাজ করানোর ইচ্ছে হয়েছিল গুণানন্দ। কিন্তু সেটা যশোর থেকে করা সম্ভব ছিল না। আর তাই সাগরসঙ্গম যাত্রা বাতিল করে সেই মন্দিরের পাশেই নিজের বসতবাটি তৈরির পরিকল্পনা করে গুণানন্দ। সেই বাড়িতেই সপরিবারে বসবাস শুরু করেন তিনি। তিনিই প্রথম বংশে দুর্গাপুজো শুরু করেন। তারপর থেকেই বংশ পরম্পরায় এই পুজো চালিয়ে আসছেন মোতিলাল বাড়ির সদস্যরা।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই পুজোর জৌলুস কমেছে তবে প্রথা ও রীতি-নীতির অন্যথা হয়নি। বাড়ির দুর্গা মন্দিরের দালানেই হয় প্রতিমা নির্মাণের কাজ। একচালার প্রতিমা মায়ের। বোধনের ঘট বসে প্রতিপদ থেকে। বেলতলায় ঘটের পুজো হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত মাকে দুটি ভোগ নিবেদন করা হয়। একটি খিচুড়ি ও অন্যটি পোলান্ন বা সাদা ভাত। এছাড়া আলাদা করে মায়ের সহচর-সহচরীদের উদ্দেশ্যে একটি মাছের পদ নিবেদন করা হয়। ভোগের থেকে আলাদা রাখা হয় এই পদ। সন্ধ্যায় লুচি ভোগ দেওয়া হয়। গৃহদেবতা রঘুনাথজির নিত্য ভোগ হয় পরিবারে। পুজোর সময়ে শিবকেও সাজসজ্জায় ভূষিত করা হয়। সন্ধিপুজোয় আগে মাটির প্রদীপ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু তার পরিবর্তন হয়েছে। আগে ছাগ বলি প্রথাও ছিল। অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো নিয়ম অনুসারে চলে আসছে। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা নয়, এলাকার মেয়েকেই কুমারী পুজোয় নেওয়া হয়। দশমীর দিন বিসর্জনের আগে গণ্ডিকাটার নিয়ম আছে। এই গণ্ডিকাটার আগেই মাকে পান্তাভোগ নিবেদন করা হয়। সেই দিন পরিবারের সবাই নিরামিশ খান। প্রতিমার গয়না সোনা ও রুপোর। কিন্তু অস্ত্র ও মায়ের মুকুট হয় রুপোর। এছাড়া মাকে সোনার টিপ পরানো হয়। মোতিলাল পুকুরেই প্রতিমার বিসর্জন হয়। বাইরের কিছু লোকজনকে দিয়ে মাকে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের সব মহিলারাই এতে অংশ নেন।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ঢাকার গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশনে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন কুমারী পুজো

পুজোর মণ্ডপে জুতো পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে অতিথিরা, দেখামাত্রই ধমক কাজলের

বাড়ির ৪০০ বছরের পুজোতে আজও নস্টালজিয়ায় ভাসেন মালা রায়

পুজোর মাঝে বানিয়ে নিন ‘পাঁঠার বাংলা’, একবার খেলে বারবার খাবেন

ছেলে-মেয়েকে নিয়ে প্যাণ্ডেল হপিং শুভশ্রীর, কাজের ফাঁকে পরিবারকে আগলে রাখছেন রাজ

দশভুজা রূপে নন, দেবী এখানে পুজিতা হন ‘দুই’ হাতেই

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর